ভোট পরবর্তী হিংসায় যখন রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীরা একে অপরকে দোষারোপ করে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষে লিপ্ত, তখন দুর্গাপুর পৌরসভার ২৮ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা কোন প্ররোচনায় পা না দিয়ে সংঘর্ষে আহত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদেরও চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেই খবর নিতে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছান। তৃণমূল কংগ্রেসের পৌরমাতার এহেন আচরণে চমকিত সকলেই। পৌরমাতার এই রাজনৈতিক সৌজন্যতায় খুশি দুর্গাপুরের সুশীল সমাজ।
জানা গেছে ২৮ নং ওয়ার্ডের মুচিপাড়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে দলীয় পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। দুই দলের পাঁচ জন কর্মী আহত হন। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ওয়ার্ডে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বিরোধী দল বিজেপি কর্মীদের মারধরের খবর কানে যায় পৌরমাতা অঙ্কিতা চৌধুরীর। জানা গেছে, অঙ্কিতা চৌধুরী রাজনৈতিক রঙ না দেখে স্থানীয় থানাকে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার যেমন নির্দেশ দেন, তেমনই দুই রাজনৈতিক দলের আহতদের উদ্ধার করে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তিরও নির্দেশ দেন।
শুক্রবার সকালে ফের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পৌরমাতা অঙ্কিতা চৌধুরী পৌঁছে প্রত্যেকের চিকিৎসা সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা যেমন খবর নেন তেমনই বিজেপি কর্মীরা ফের এলাকায় ফিরলে যাতে অশান্তি না হয় উভয় দলের কর্মীদের কাছে সেই আবেদনও করেন বলে জানা গেছে। এই রাজনৈতিক সৌজন্যতা নিয়ে ২৮ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা অঙ্কিতা চৌধুরীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি এলাকার পৌরমাতা। আমার ওয়ার্ডের বসবাসকারী সকলকেই সমান ভাবে দেখা আমার কর্তব্য। আমরা সকলেই লড়াই করছি আপন লক্ষ্যে। প্রত্যেকের নিজ নিজ রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পরে। তাই ভেদাভেদ ভুলে আমি প্রথমে দুই পক্ষের দলীয় কর্মীদের উদ্ধার করে চিকিৎসার চেষ্টা করি পুলিশকে দিয়ে। এবং কোন পক্ষই যাতে ফের অশান্তিতে জড়িয়ে না পড়ে সেই বিষয়টি দেখার দায়িত্ব আমার।’
জানা গেছে, একই ভাবে রাজনৈতিক সৌজন্যতা দেখিয়ে এদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিজেপি সভাপতি লক্ষণ ঘড়ুই আহত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে শাসকদলের আহত কর্মীদেরও খোঁজ খবর নিতে মহকুমা হাসপাতালে যান।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?