কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গী হানার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট করার অভিযোগে দুর্গাপুরের এক এলআইসি কর্মীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করল সংস্থা। দুর্গাপুরের এলআইসি অফিস থেকে উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ওই কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে সংস্থার নির্দেশ সংক্রান্ত নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়ে আসেন বাড়িতে। এই নিয়ে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে শ্রমিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, দুর্গাপুরের বিধাননগরের পূবালির বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত দুর্গাপুরের এলআইসির এক নং শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত। কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গী হানা প্রসঙ্গে ফেসবুকে কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত তাঁর নিজস্ব মতামত পোস্ট করেন। আর সেই পোস্টকে ঘিরে ওঠা বিতর্কের জেরে এলআইসি কর্তৃপক্ষ কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্তকে সাসপেন্ড করেন।
এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত বলেন, ‘আমি নিজেই বুঝতে পারছিনা আমি কি দোষ করলাম, যাতে আমাকে আমার হেড কোয়ার্টার সরাসরি অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করে দিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গী হানায় জওয়ানদের মৃত্যুতে আমি কোন উল্লাস প্রকাশ করিনি পোস্টে। বা আমার দুঃখ হয়নি একথাও আমি কোথাও লিখি নি। আমি শুধু লিখেছি যে এর থেকে যখন নিরীহ মানুষ মারা যায় তখন আমার দুঃখ বেশি হয়। কোন বাচ্চার চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে, লিখেছিলাম এইসব বাচ্চাদের তো পাথর ছোঁড়ার বয়স নয়, এইসব বাচ্চারা তো যুদ্ধে গিয়ে মারা যায় নি। কাশ্মীরের কিছু বাচ্চাদের ছবি দিয়ে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি আমি পোস্ট করেছিলাম।’ কৃষ্ণেন্দু আত্মপক্ষ সমর্থন করে দাবি করেন, আমি কোন অন্যায় করিনি।
এদিকে দুর্গাপুরের এলআইসি দফতরে কৃষ্ণেন্দুর সহকর্মীরাও হতবাক কৃষ্ণেন্দুর সাসপেনশন নিয়ে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক কৃষ্ণেন্দুর সহকর্মীরা বলেন, ‘কৃষ্ণেন্দু ও তাঁর স্ত্রী খুব সামাজিক। প্রচুর সোশ্যাল কাজ করে। দুস্থ ছেলেমেয়েদের নিয়ে সারা বছর কাজ করে। তাছাড়া এলআইসি দফতরে কৃষ্ণেন্দু নিজের কাজকর্ম সুনামের সঙ্গেই করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় করা একটা পোস্টকে দেশবিরোধী ও সংস্থার সুনামের পক্ষে ক্ষতিকর বলে এলআইসি তাঁকে সাসপেন্ড করল। এটা খুবই দঃখজনক ঘটনা।’
———–