করোনাকালে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি স্কুল-কলেজে শুরু হয়েছে পঠন-পাঠন। সংখ্যাগরিষ্ঠ পড়ুয়া ফের স্কুলমুখী হলেও অল্প কিছু সংখ্যক পড়ুয়া এখনও গরহাজির রয়েছে এমন তথ্যই উঠে আসছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি থেকে। ফের যাতে সব পড়ুয়া নিয়মিত স্কুলমুখী হয় সেই জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ুয়া অভিভাবকদের সাথে কথা বলতেও দেখা গেছে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কিন্তু কবে সব পড়ুয়ারা ফের স্কুলে ফিরবে সেই বিষয়ে রয়ে গেছে প্রশ্ন চিহ্ন। কারণ করোনাকালে পেট চালাতে পড়ুয়াদের একাংশ বেছে নিয়েছে বিভিন্ন পেশা। বর্তমানে সেই পেশাই তাদের স্কুলে ফেরার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শেখ সালাম এরকমই এক পড়ুয়া। উখড়া কুঞ্জবিহারী ইনস্টিটিউশনের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। অভাবের সংসারে বাবা, দাদা দু’জনেই দিনমজুরের কাজ করেন। লকডাউনের সময় তাঁদের দু’জনেরই কোন কাজ ছিল না। সংসারে নেমে এসেছিল অনিশ্চয়তা। সেই সময়ে বাধ্য হয়ে টোটো চালানো শুরু করে একাদশ শ্রেণির ছাত্র শেখ সালাম। সে জানায় ভাড়ার টোটো চালিয়ে দিনান্তে ২০০-২৫০ টাকা উপার্জন হয়। এই টাকা কিছুটা হলেও সংসারের কাজে লাগে। স্কুলে গড় হাজিরা প্রসঙ্গে সালাম বলে, ‘টোটোটি ভাড়ার, প্রতিদিন মালিককে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করতে হয়। টোটো না চালালে সেই টাকা পাব কোথা থেকে? তাছাড়া সংসারেও টাকা দিতে পারব না। সেই কারণেই টিউশন পড়া জারি রাখলেও স্কুল যাওয়া হচ্ছে না।’ তবে টিউশনে পড়েই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা আছে বলে জানায় সে। বেশ কিছুদিন হল, স্কুল খুলেছে তবে স্কুলের পক্ষ থেকে এখনও কেউ তার খোঁজ নেয়নি বলে আক্ষেপ সালামের। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সোমা দাসগুপ্ত জানান, ওই ছাত্রের বিষয়টি জানা ছিল না। শীঘ্রই ওই ছাত্র ও তার অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা হবে।