বর্ধমান পুরসভার প্রশাসক তৃণমূল নেতা প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই গ্রেফতার করার পর তৃণমূল কংগ্রেস দলীয়ভাবে প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেও এখনই রাস্তায় নেমে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। বৃহস্পতিবার রাতে প্রণববাবুকে কলকাতায় সিবিআই গ্রেফতার করার ঘটনায় শুক্রবার তাঁকে আসানসোল কোর্টে পেশ করে ৩ দিনের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। আর শনিবার বর্ধমানে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, দল প্রণববাবুর পাশে আছে। পাশাপাশি পুরসভা পরিচালনায় যাতে কোনরকম সমস্যা না হয় সেজন্য সোমবারের মধ্যেই নতুন প্রশাসক নিয়োগ করা হবে বলেও তিনি এদিন জানিয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথবাবু এদিন জানিয়েছেন, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েই বিজেপি নিজেদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে। প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও বিজেপি সেই একই পদ্ধতিই ব্যবহার করেছে। তিনি এদিন জানিয়েছেন, সানমার্গ চিটফাণ্ড কাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরেই তদন্ত চলছে। এমনকি সিবিআই চার্জশিটে প্রণববাবুর নামও ছিল না। কিন্তু তিনি প্রশাসক হিসাবে বসার পরই তাঁর নাম সাপ্লিমেণ্টারী চার্জশিটে রাখা হয় বলে এদিন অভিযোগ করেছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। রবীন্দ্রনাথবাবু এদিন প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্য জুড়ে যখন পুরভোটের দামামা বেজে উঠেছে তখন সিবিআইয়ের এই অতি সক্রিয়তার কারণ কি? পৌরপ্রশাসককে কালিমালিপ্ত করতেই কি নতুন এই নাটক করা হচ্ছে – প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথবাবু এদিন জানিয়েছেন, এভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মাথা নোয়ানো যাবে না। বিজেপির সব যড়যন্ত্র ব্যর্থ করে পুরভোটেও জয়ী হবে তৃণমূলই।

এদিকে, প্রণববাবুর এই গ্রেফতারির ঘটনায় বর্ধমান শহর জুড়েই চলছে চাপানউতোর। যদিও এর ফলে বর্ধমান পুরসভার পরিচালনায় কোন সমস্যাই হবে না বলে এদিন জানিয়েছেন উপ পুরপ্রশাসক আইনুল হক। তিনি জানিয়েছেন, প্রণববাবুকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পাল্টা তিনি প্রশ্ন তুলে জানান, বিজেপির এক নেতা আসার পরই রাত্রিবেলায় প্রণববাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটাও ভাবা দরকার। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বর্ধমানে একটি রোড শোয়ে অংশ নেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। অপরদিকে, সানমার্গ চিটফাণ্ড মামলায় প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পর শুরু হয়েছে নতুন করে চাপানউতোর। খোদ বর্ধমান আদালতেও সানমার্গ সহ অন্যান্য কয়েকটি চিটফাণ্ড নিয়ে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, সেই সমস্ত মামলায় পুলিশ কোনোরকম তদন্তই করেনি এতকাল। কার্যত মামলাগুলিকে ফেলে রাখা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

Like Us On Facebook