বিতর্কের অবসান ঘটল। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের মাঙ্গলিক সভাঘরে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে দুর্গাপুর পুরসভার বরো চেয়ারম্যান পদ সহ তৃণমূলের বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানালেন দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নং বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর দাদা-ভাইয়ের আত্মিক সম্পর্ক। দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়ে শাসকদলের অন্দরেও জোর জল্পনা চলছিল।

শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলায় তৃণমূল কংগ্রেসের কোন কর্মসূচিতে গেলেই জেলা সম্পাদক চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলা নেতৃবৃন্দ কুকথা বলছেন বলে অভিযোগ দলত্যাগী চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই দাদার দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াইয়ে পাশে থাকতে তিনি আজ দুর্গাপুর পুরসভার কাউন্সিলর, বরো চেয়ারম্যান পদ সহ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানান। চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আজ তিনি তাঁর সহকর্মীদের দিয়ে জেলা সম্পাদক পদের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিচ্ছেন জেলা সভাপতির কাছে। এবং একই সঙ্গে দুর্গাপুর পুরসভার কাউন্সিলর এবং বরো চেয়ারম্যান পদ থেকেও পদত্যাগ করছেন। চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় আজ তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার চেয়ারম্যান শিবদাশন দাশুর প্রতি সরাসরি আঙ্গুল তুলে বলেন, ‘জেলা কমিটির এক মিটিংয়ে গিয়ে আমি আমার নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্কে অনেক কুকথা শুনি শিবদাসন দাশুর মুখে। তাছাড়া দলীয় কোন কর্মসূচিতে গেলেই আমাকে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে অন্যভাবে দেখা হচ্ছে। কেন এই দৃষ্টিভঙ্গি? তাই স্বাধীন ভাবে মানুষের পাশে থাকতে দলের সমস্ত পদ থেকে আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলাম।’ এদিন চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়ে বলেন, ‘১৯৯৮ সাল থেকে দলের সঙ্গে আমি যুক্ত। ২০০৯ সাল থেকে আমি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই গাড়িতে চেপে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছি। আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। আমার নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই যারা আমাকে চেয়ার দিয়েছিলেন তাঁদের চেয়ার ফিরিয়ে দিয়ে আমি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে থাকতে আজ দলের সমস্ত পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’ চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগের কথা ঘোষণা করার পর শুভেন্দু অধিকারী এবং চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামীরা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কে মিষ্টি মুখ করান।

জীতেন্দ্র তিওয়ারির মতো চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন পদত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে একহাত নেন। তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুরের উন্নয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকার একটি ফাইল আটকে দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। বার বার বলা সত্ত্বেও তিনি সেই ফাইলকে অনুমোদন দেননি। দুর্গাপুরের উন্নয়নের জন্য বললেই তিনি আমাকে বলছেন তাড়িয়ে দেব। জেলা সভাপতিকে তাড়িয়ে দেব বলছেন। সবাইকে উনি তাড়িয়ে দেব বলছেন। উনি দলের কাউন্সিলর পদের টিকিট পাননি বলে এক সময় দিদির বাড়িতে ঢিল ছুঁড়তে গিয়েছিলেন। আমরা তাঁর কাছে কোন কিছু শিখতে যাব না।’

নিজের পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করছেন চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়
Like Us On Facebook