একশোর অধিক স্বেচ্ছায় রক্তদান করে ‘রক্তবীর’ সন্মান পেলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা বিশ্বদীপ রায়চৌধুরী। দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম এক অনুষ্ঠানে বিশ্বদীপ রায়চৌধুরীকে এই সন্মান প্রদান করে সংবর্ধনা দেন। জানা গেছে, বিশ্বদীপবাবু গত ফেব্রুয়ারি মাসেই এক স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরে ১০৬ তম রক্তদান করেন। এরপরেই দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম বিশ্ব রক্তদান দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বিশ্বদীপবাবুকে সান্মানিক রক্তবীর সন্মানে ভূষিত করেন।

বিশ্বদীপবাবুকে সম্মানিত করে দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কবি ঘোষ বলেন, ‘আমরা ধন্য মনে করছি বিশ্বদীপ রায়চৌধুরীকে সম্মানিত করতে পেরে। বিশ্বদীপবাবু আমাদের একজন আইকন। একশোর অধিক স্বেচ্ছায় রক্তদান করছেন বিশ্বদীপবাবু।’ বিশ্বদীপ রায়চৌধুরী বলেন, ‘আমার রক্ত বিরল শ্রেণির। এই রক্ত অপচয় করা উচিত নয়। তাই প্রাণ বাঁচাতে আমার রক্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি স্বেচ্ছায় রক্তদান করে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করি মাত্র।’

জানা গেছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বিশ্বদীপবাবুর আগে আরও দু’জন আছেন যারা শতাধিক বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। আসানসোলের অজয় প্রসাদ ও তাঁর স্ত্রী ললিতা প্রসাদ। কিন্তু দুর্গাপুরে একমাত্র বিশ্বদীপ রায়চৌধুরী রক্তদানে সেঞ্চুরি হাঁকালেন। কিন্তু কেন এত স্বেচ্ছায় রক্তদান এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বদীপবাবু তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার কথা জানান। তিনি জানান, একসময় মাত্র চার ইউনিট রক্তের জন্য বিশ্বদীপবাবুর বাবা কালীদাস রায়চৌধুরী কলকাতার শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তাঁর অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় হন্যে হয়ে ঘুরেও কোথায় রক্ত পাওয়া যায় নি। শেষমেশ শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী স্বেচ্ছায় রক্তদান করায় বিশ্বদীপবাবুর বাবার অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচে। সেই থেকে বিশ্বদীপবাবু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যতদিন বাঁচবেন ততদিন মানুষের প্রাণ বাঁচাতে স্বেচ্ছায় রক্তদান করবেন।

বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?

Like Us On Facebook