গাঁজা কেনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের গন্ডগোলের জেরে পুলিশি হস্তক্ষেপের ফলে দুর্গাপুরের প্রান্তিকা এলাকা শুক্রবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। স্থানীয় বস্তিবাসী এ-জোন ফাঁড়িতে হামলা চালায়। প্রান্তিকা ফাঁড়ি লক্ষ করে ইট ও পাথর বৃষ্টি, পুলিশের গাড়ি ও বাস ভাঙচুর চালালো এলাকার মানুষজন। প্রান্তিকা ফাঁড়ি লক্ষ করে চলে ব্যাপক বোমাবাজি। উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। লাঠিচার্জ করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৩ মহিলা সহ ৪২ জনকে আটক করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়। গোটা এলাকায় পুলিশ টহল শুরু করে।

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সন্ধ্যায়। অভিযোগ, প্রান্তিকা ফাঁড়ির সামনে তালতলা বস্তির বাসিন্দা নটু ও জাহাঙ্গীর নামে দুই ব্যাক্তি স্থানীয় এক কিশোরকে গাঁজা কিনে এনে দিতে বলে। ওই কিশোর রাজি না হলে নটু ও জাহাঙ্গীর মিলে ওই কিশোরকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। ওই কিশোর বাড়িতে সব কথা জানালে কিশোরের পরিবার স্থানীয় প্রান্তিকা ফাঁড়িতে নটু ও জাহাঙ্গীরের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রান্তিকা ফাঁড়ির পুলিশ অভিযোগ পেয়ে নটুকে গ্রেফতার করলে নটুর পরিবারের লোকজন প্রান্তিকা ফাঁড়িতে হামলা চালায়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বাস ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।

এরপর পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করলে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় নিশান হাট বস্তি এলাকার বাসিন্দারাও পুলিশের উপর বোমাবাজি শুরু করে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয়। পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয়। এদিনের ঘটনায় তিনজন পুলিশকর্মী আহত হয় বলে জানা গেছে। অপরদিকে বিক্ষোভরতদের বেশ কয়েকজন আহত হন।

স্থানীয় বস্তি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুই পরিবারের ঝগড়ায় পুলিশের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন কি ছিল? পুলিশ অভিযুক্তকে ধরার নামে বস্তিতে এসে বেশ কয়েকটি টোটো ও অটো ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ করেন বস্তি এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের বক্তব্য, দুই পরিবারের গন্ডগোলের জেরে ফাঁড়িতে অভিযোগের পর পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে। এরপরেই অভিযুক্তকে ছাড়াতে ফাঁড়িতে হামলা চালায় স্থানীয় দুই বস্তির বাসিন্দারা।

খবর সংগ্রহ করা পর্যন্ত জানা গেছে, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও দুই বস্তির বাসিন্দারা হঠাৎ করেই ফাঁড়িতে অভিযুক্তকে ছাড়াতে যেভাবে ইট ও পাথর বৃষ্টি করল এবং ফাঁড়িতে হামলা, পুলিশের গাড়ি, বাস ভাঙচুর ও বোমাবাজি সহ গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হল সেই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বেশ চিন্তিত। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?






Like Us On Facebook