আগে ছিল সিপিএমের মুক্তাঞ্চল, আর এখন তৃণমূল কংগ্রেসের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভা এলাকা। অথচ এই এলাকায় বসবাস করেন বেশ ভাল সংখ্যায় বাংলাদেশ থেকে আগত মানুষেরা। তাদের জন্য সিপিএম, কংগ্রেস কিংবা তৃণমূল কেউই কিছু করেননি। উল্টে এই সমস্ত বাংলাদেশী হিন্দুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য মোদিজী তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পার্লামেণ্টে বিল এনেছেন সেই বিলের বিরোধিতা করেছেন সিপিএম, কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে যখন ভোট চাইতে আসবে তারা তাদের কলার চেপে ধরে জিজ্ঞাসা করুন কেন বিরোধিতা করেছেন। চোখে চোখ রেখে তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন, ভোটের বেলায় ভোট নেবেন, তাদের ভোটের কাজে ব্যবহার করবেন আর দেশের নাগরিকত্ব দেবার সময় কেন ধোঁকা দিয়েছেন। বুধবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার নুড়মোড় সংলগ্ন মাঠে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে গণহত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত বিজেপির ডাকা সভায় এভাবেই দফায় দফায় রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
দিলীপবাবু এদিন বলেন, যে সব বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিমরা এখানে এসে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছেন তাদের ভারতে থাকতে দেওয়া হবে না। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে ঘাড় ধাক্কা দিয়েই বার করে দেবে। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়াই বিজেপির কর্তব্য। বিজেপি সেই কাজই করছে। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে দিলীপবাবু বলেন, কেন্দ্র সরকার চাষীদের কুইণ্টাল প্রতি ১৭৭০ টাকা দাম দিচ্ছে। আর রাজ্য সরকার দিচ্ছে বস্তাপিছু ৮৫০ টাকা। এখানেই চাষীদের ধোঁকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। দিলীপবাবু এদিন বলেন, মুড়ি মুড়কির এখন এক দর দিদির রাজত্বে। মদ খেয়ে মরলেও ২ লাখ টাকা, আবার চাষী মরলেও ২ লাখ টাকা। আর মহিলাদের ইজ্জত, সম্ভ্রম গেলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। দিলীপবাবু এদিনও তৃণমূল নেতাদের সিণ্ডিকেট রাজ আর তোলাবাজি নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্র সরকার গরীব মানুষের জন্য পায়খানা তৈরীর টাকা দিচ্ছেন। সেই টাকায় ভাগ বসাচ্ছেন দিদির ভাইয়েরা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘরের টাকা পেলে তার একটা অংশ দিদির ভাইদের না দিলে টাকা পাচ্ছেন না উপভোক্তারা – অভিযোগ করেছেন এদিন দিলীপবাবু।
প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়েও তীব্র সমালোচনায় বিঁধেছেন তিনি রাজ্য সরকারকে। দিলীপবাবু বলেন, বালি নিয়ে রেইড করতে গেলে প্রশাসনিক কর্তাদের গালাগালি ধমকে চমকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে মারছে তৃণমূলের নেতারা। আর পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করে বিজেপির নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। দিলীপবাবু এদিন রীতিমত হুঁকার দিয়ে বলেন, এসব নিয়েই তাঁরা রাজ্যে গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা করতে চেয়েছিলেন। ভয়ে পেয়ে যান দিদি। সবাই সব জেনে যাবে এই ভয়েই গণতন্ত্র যাত্রা বন্ধ করতে কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। দিলীপবাবু বলেন, বিজেপিও সুপ্রীম কোর্টে গেছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র যাত্রা হবেই। গায়ের জোরে বিজেপিকে আটকে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি ৩টি রাজ্যে ভোট হয়েছে। কিন্তু কোথাও কোনো রিগিং,ভোট লুঠ, মারদাঙ্গার ঘটনা ঘটেনি। বিজেপি কম ভোটে দুটি রাজ্যে পরাজিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু জোর করে ভোটের চেষ্টা করেনি।