দুর্গাপুরের ৩৮নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার অরবিন্দ নন্দী শেষমেশ ঘরে ফিরেও নিজের ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলরের স্বামীর হাতে বেধড়ক মার খেয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতলে ভর্তি হলেন বলে অভিযোগ। তাঁর সঙ্গে মার খেয়ে তাঁর এক অনুগামী বাপ্পা গড়াইও দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন অরবিন্দবাবুর অনুগামীরা। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা সামাল দিতে গেলে পুলিশের উপরও চড়াও হন বর্তমান কাউন্সিলর আলো সাঁতরার স্বামী পার্থ চৌধুরি ও তার অনুগামীরা বলে অভিযোগ। পুলিশ পার্থ চৌধুরীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের বেডে শুয়ে ৩৮ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমাকে বাড়িতে ছেড়ে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিল আমার সহকর্মী বাপ্পা গড়াই। রাস্তায় লাঠিসোটা নিয়ে পথ আটকে ব্যাপক মারধর করে ৩৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আলো সাঁতরার স্বামী পার্থ চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা। সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ করেন অরবিন্দবাবু। অরবিন্দবাবু আরও বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাপ্পাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাকেও প্রচন্ড মারধর করে পার্থ চৌধুরী ও তাঁর লোকজন। পুলিশ এলে পুলিশের উপরও চড়াও হয়। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের শিল্পাঞ্চল শীর্ষ নেতৃত্বকেও সব জানিয়েছি।

উল্লেখ্য, দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনে ৩৮নং ওয়ার্ডের তদানীন্তন কাউন্সিলর নিজের আসনটি মহিলা আসনে হিসাবে সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় অরবিন্দ নন্দী নিজের আসনে নিজের স্ত্রীকে প্রার্থী পদ দেওয়ার জন্য তদ্বীর করেন। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব অরবিন্দ নন্দীর আবেদনে সাড়া না দিয়ে আলো সাঁতরাকে দলীয় প্রার্থী করায় অরবিন্দ নন্দী তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় অনুশাসন ভেঙ্গে তাঁর স্ত্রীকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করায়। তৃণমূল নেতৃবৃন্দ অরবিন্দ নন্দীর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে ও তাঁর কয়েকজন অনুগামীকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এর পর পুলিশ অরবিন্দ নন্দীকে বেশকিছু প্রতারণা মামলায় জড়ায় বলে অভিযোগ। সঙ্গে তাঁর বাড়িতে একের পর এক দুষ্কৃতী হামলা চলে বলে অভিযোগ। শেষমেশ বিভিন্ন অশান্তি থেকে বাঁচতে অরবিন্দ নন্দী ফের পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বনাথ পড়িয়ালের হাত ধরে ফের তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকার নিচে আশ্রয় নেন। কিন্তু তার পরেও অরবিন্দ নন্দী ও তাঁর অনুগামীর আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করলেন।

অপর দিকে ৩৮ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আলো সাঁতরা অরবিন্দ নন্দীর অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগে বলেন অরবিন্দ নন্দী পরিকল্পিত ভাবে আমাদের অনুগামীদের মারধর করেছে। তারা সকলেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ভর্তি।

Like Us On Facebook