পাশবুকে টাকা জমার সিলমোহর ও পোস্ট মাস্টারের সই থাকলেও সেই টাকা পোস্ট অফিসে জমা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রতারিত কয়েকশো আমানতকারী। আমানতকারীদের কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল পোস্ট মাস্টার ও পোস্ট অফিসের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। টাকা ফেরতের দাবিতে আমানতকারীরা বিক্ষোভ দেখালেন এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন। অভিযোগের পরিপেক্ষিতে পুলিশ পোস্ট অফিসের কর্মীকে গ্রেফতার করলেও পলাতক পোস্ট মাস্টার। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার শিপতাই পোস্ট অফিসের ঘটনা।
আমানতকারীদের অভিযোগ, তাঁদের টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন পোস্ট মাস্টার আদিত্য দাস ও পোস্ট অফিসের অস্থায়ী কর্মী কৌশিক মাঝি। প্রতারিত আমানতকারীদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পুলিশ বুধবার ভোরে শিপতাই সাব পোস্ট আফিসের অস্থায়ী কর্মী কৌশিক মাঝিকে গ্রেফতার করেছে। শিপতাই গ্রামেই তাঁর বাড়ি। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে। বিচারক ধৃতকে জেল হেপাজতে পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন।
হুগলির খানপুর পোস্ট অফিসের অধীনে রয়েছে শিপতাই গ্রামের সাব পোস্ট অফিসটি। ওই সাব পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টার পদে
দায়িত্বে রয়েছেন শিপতাই গ্রাম নিবাসী আদিত্য দাস। আর তাঁরই সহযোগী হিসাবে পোস্ট অফিসে অস্থায়ী পদে কাজ করতেন কৌশিক মাঝি। টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পোস্ট মাস্টার গ্রেফতার না হওয়ায় এদিন শিপতাই পোস্ট অফিসের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আমানতকারীরা।
আমানতকারীদের অভিযোগ, শিপতাই গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী ৪-৫ টি গ্রামের মানুষ জন শিপতাই পোস্ট অফিসের গ্রাহক। সঞ্চয়ের টাকা তাঁরা সেখানেই জমা রাখেন। আগে কোন সমস্যা না হলেও ২০১৮ সালের পর থেকে অনৈতিক কাজ কর্ম শুরু হয় পোস্ট অফিসে। তাঁদের সঞ্চয়ের টাকা পোস্ট অফিসে জমা দিলেও পোস্ট মাস্টার অ্যাকাউন্ট বইয়ে পেনে লিখে স্ট্যাম্প দিয়ে বলতেন টাকা জমা হয়ে গেছে। টাকা জমা সংক্রান্ত কম্পিউটার বিল চাইলে পোস্টমাস্টার আদিত্য দাস জানিয়ে দিতেন মেশিন খারাপ। কোন অসুবিধা হবে না বলে জানিয়ে তাঁদের অ্যাকাউন্ট বই পোস্ট মাস্টার নিজের কাছেই রেখে দিতেন। পোস্ট মাস্টার তাঁদের গ্রামেরই বাসিন্দা, তাই তাঁর কথা তাঁরা সরল মনে বিশ্বাস করেছিলেন। দিন ৬-৭ আগে পোস্ট মাস্টার আদিত্য ও তাঁর সহযোগী কৌশিক পোস্ট অফিস বন্ধ করে দিয়ে গায়েব হয়ে যায়। তার পর থেকে পোস্ট অফিস বন্ধই রয়েছে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে গ্রামের অনেকে এরপর নিকটবর্তী খানপুর পোস্ট অফিসে যান। সেখানকার আধিকারিকদের তাঁরা অ্যাকাউন্ট নম্বর দিলে তাঁরা জানিয়ে দেন, দীর্ঘ দিন কোন টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। প্রতারক পোস্ট মাস্টারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন প্রতারিত আমানতকারীরা। পোস্ট মাস্টারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আমানতকারীরা। পোস্ট মাস্টারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।