দামোদরের পাড়ে পল্লীশ্রী মানাচরের কুষ্ঠ আক্রান্ত জারোয়া সম্প্রদায়ভুক্ত বৃদ্ধা মালতি হালদারের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিল দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারকে অবিলম্বে মানাচরের পল্লীশ্রীতে মেডিকেল টিম পাঠিয়ে বৃদ্ধার চিকিৎসা শুরু করার নির্দেশ দেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। একই সঙ্গে দুর্গাপুর রেডক্রশ সোসাইটির চিকিৎসকরাও জারোয়া বৃদ্ধার পাশে দাঁড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কুষ্ঠ আক্রান্ত মালতি হালদার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধের অভাবে করুণ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন – এই খবর সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন। জানা গেছে, আন্দামানের গভীর জঙ্গলের জারোয়া সম্প্রদায়ের এক মহিলার ৪০ বছর আগে প্রেমের পরিণতিতে বিয়ে হয় দুর্গাপুরের রাজু হালদার নামে এক রাজ মিস্ত্রির সঙ্গে। রাজুর বিয়ে মেনে নেয়নি রাজুর পরিবার। স্বাভাবিকভাবেই রাজু হালদার দামোদরের পাড় মানাচরেই জারোয়া বৌ-এর সঙ্গে সংসার পাতে। রাজু ভালোবেসে বৌ-এর নাম রাখে মালতি। রাজু ও মালতির দুই কন্যা ও এক পুত্র হয়। পরবর্তী সময় ছেলে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। মালতিও আন্দামানের সমুদ্র, জঙ্গল, জলবায়ু ভুলে ভরা সংসার নিয়ে থাকার মাঝেই হটাৎ স্বামী রাজু হালদার মারা যায় গত সাত বছর আগে। অন্যদিকে মালতিও কুষ্ঠব্যাধিতে আক্রান্ত হন। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ না পেয়ে মালতি পাশের জেলা বাঁকুড়ার বড়জোড়া ও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে অনেক দৌড়ঝাঁপ করেন। মালতিদেবী এখন বিনা চিকিৎসা ও ওষুধের অভাবে কঠিন যন্ত্রনা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কেন্দ্র যখন আন্দামানের জারোয়া সম্প্রদায়ের সংরক্ষনের বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে তখন বঙ্গ দেশে বাঙালির জারোয়া বৌ-এর সব স্বপ্ন খান খান হয়ে যাচ্ছে বিনা চিকিৎসায়। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বর্ধমান ডট কে বলেন, ‘মহকুমা প্রশাসনের তরফ থেকে মালতি হালদারের চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

Like Us On Facebook