পায়েস রাঁধলো নার্সরা। পরমান্ন মুখে তুলে দিলেন হাসপাতালের সুপার। নবসাজ ও ফুলমালা, উলুধ্বনিতে তৃষা ও কৃষের শুক্রবার অন্নপ্রাশন সারলেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীরা। গত ছয় মাস ধরে বড় করে তোলার পর শনিবার চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়ার আগে শুক্রবার কর্মব্যস্ততার ফাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স সহ সমস্ত কর্মীরা দাবিহীন দুটি শিশুর নিয়ম করে অন্নপ্রাশন পর্ব সারলেন।
তৃষা ও কৃষের যখন দুই তিন দিন বয়স তখন তাদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ঠাঁই হয়। ডাক্তারবাবু-নার্সদের নজরদারিতে আর হাসপাতালের আয়ামাসিদের কোলেপিঠে কেটে গিয়েছে ছ’মাস। হাসপাতালের সমস্ত কর্মীরা দুটি শিশুকে ক্ষণিকের জন্যও বুঝতে দেয়নি তাদের মা-বাবার অভাব। ছ’মাস অতিক্রান্ত হবার পর প্রশাসনিক নিয়মে শনিবার তৃষা ও কৃষকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাই শুক্রবার শিশুদুটির শাস্ত্রীয় নিয়মেই অন্নপ্রাশন পর্ব সারলেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার সহ সমস্ত কর্মীরা। একই সঙ্গে হাসপাতালের নার্স ও কর্মীদের মনও কেমন করে উঠল, শনিবার থেকে তৃষা ও কৃষের অনুপস্থিতির কথা ভেবে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বর্ধমান ডট কমকে বলেন, ‘দাবিহীন দুটি শিশুকে দুই তিন দিন বয়স থেকে লালন পালন করার পর ছয় মাস বয়সে শনিবার চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়ার আগে মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও সমস্ত কর্মীরা তৃষা ও কৃষের শুক্রবার অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান করলেন। সমস্ত নিয়ম মেনে আমি মুখে ভাত দিলাম শিশুদুটির।’ তৃষা ও কৃষকে বড় করে তোলা মহকুমা হাসপাতালের নার্সরা বলেন, ‘হাসপাতাল সরগরম ছিল শিশুদুটিকে নিয়ে। শনিবার হোমের হাতে তুলে দেওয়া হবে তৃষা ও কৃষকে তাই আমাদের সকলের মনও খুব খারাপ।’