দুর্গাপুরের ডিপিএল টাউনশিপে থাকেন দিব্যেন্দু আচার্য্য। এক বন্ধুর সূত্র ধরে পরিচয় দুর্গাপুরেরই বাসিন্দা সোমনাথ চক্রবর্তী ও সঞ্জয় দাসের সঙ্গে।সোমনাথ নিজেকে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার আর সঞ্জয় নিজেকে রেঞ্জ অফিসার বলে পরিচয় দেয় দিব্যেন্দুর পরিবারের কাছে। যোগসূত্র তৈরি করে দিয়েছিল দিব্যেন্দুর বন্ধুর এক কাকা। টাকা দিলেই চাকরি হয়ে যাবে, সোমনাথ আর সঞ্জয়ের এই কথা বিশ্বাস করে ফেলেন দিব্যেন্দু ও তাঁর মা।
গত মাসের ১৬ তারিখে দিব্যেন্দু ও তাঁর মা ধার দেনা করে ৫ লাখ টাকা তুলে দেন প্রতারকদের হাতে। দিব্যেন্দু তাঁর এক বন্ধুকে সব ব্যাপারটা জানান, বীরভূমের এই যুবকও সরকারি কাজের লোভ সামলাতে না পেরে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে দেয় প্রতারকদের। এরপর বীরভূমের ইলামবাজারের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের বলা হয় এই হচ্ছে তাঁদের কর্মস্থল, দেওয়া হয় সরকারি বন দফতরের লোগো লাগানো নিয়োগপত্রও।
কিন্তু ফরেস্ট পাহারা দেওয়ার কাজ করতে গিয়ে একদিন পুলিশের জালে পড়তে হয় দিব্যেন্দুর বন্ধুকে, নিয়োগপত্র দেখানো মাত্রই তাঁরা জানতে পারেন সবটাই জাল। শেষে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় দিব্যেন্দু ও তাঁর ওই বন্ধু। পুলিশ গ্রেফতার করেছে সোমনাথ আর সঞ্জয়কে, নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এখন পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে, দুর্গাপুরের দিব্যেন্দু এখন অথৈ জলে পড়েছেন, বাবা বেসরকারি কারখানার সামান্য এক নাইট গার্ড। ধার-দেনা করে এই পাঁচ লক্ষ টাকা এনেছিল বাবা, তাই টাকা ফেরত না পেলে গোটা পরিবারের কাছে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প রাস্তা খোলা থাকবে না বলে জানান দিব্যেন্দু ও তাঁর মা। সব মিলিয়ে এতগুলো টাকা দিয়ে সর্বশ্রান্ত হয়ে এখন বেশ বিপদে পড়ছে দুর্গাপুরের আচার্য্য পরিবার, পুলিশে আস্থা আছে ঠিকই কিন্তু টাকা ফেরত না পেলে আরও সঙ্কটের মুখে পড়ে যাবেন বলে জানালেন দিব্যেন্দু। সূত্র মারফৎ জানা গেছে, শুধু দুর্গাপুর নয়, বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার বেশ কয়েকজন যুবকও এই প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে।