ছট পুজোর অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতার পাশে বসাকে ঘিরে চলা বিতর্কের অবসান ঘটাতে শনিবার বিকেলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে দুর্গাপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নং বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকল্পনা মাফিক ছট পুজোতে তাঁকে নিয়ে বিকৃত খবর পরিবেশন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দেন দুর্গাপুরের এই তরুণ তুর্কি শাসকদলের নেতা।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার ছট পুজো উপলক্ষে দামোদর ব্যারেজের বিসর্জন ঘাটে ছট পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে ছট পুজোতে অংশগ্রহণ করেছিলেন স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন বিজেপি রাজ সহ-সভাপতি রাজু ব্যানার্জীও। অনুষ্ঠানস্থলে দু’জনের পাশাপাশি বসার ব্যবস্থা করেন ছট পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। পুজোকে রাজনীতির উর্ধ্বে তুলে সৌজন্যের খাতিরে চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল রাজু ব্যানার্জীর পাশে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট চেয়ারে বসেন। সৌজন্যের খাতিরে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আর এখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। সংবাদ মাধ্যমে এই ছবি ও খবর ছড়িয়ে পড়তেই দুর্গাপুরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে থাকে।
চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি নেতার পাশে বসাকে কেন্দ্র করে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টেনে মুখোরোচক খবরের জেরে শাসকদলের অন্দরেও উত্তাপ বাড়তে থাকে। সেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে শনিবার দুর্গাপুরের এই জনপ্রিয় শাসকদলের নেতা ছট পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে সামাজিকতার খাতিরে পুজোতে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে দাবি করে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেন সাংবাদিক সম্মেলনে। চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন অনুগত সৈনিক। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন অনুগত সৈনিক হিসেবে সামাজিক কাজে ব্রতী রয়েছি। একই সঙ্গে আমার নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আমার দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক ছাত্র অবস্থা থেকে। আমি আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সারা বছর দুর্গাপুর পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজে যুক্ত থাকি। স্থানীয় মানুষ আমাকে তাই সুখ দুঃখের সময় সারা বছর সঙ্গে পায়। তাঁদের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে আমি রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে সমস্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হই। একই ভাবে ছট পুজোতেও হিন্দি ভাষী ভাইদের আমন্ত্রণ রক্ষার্থে যোগদান করি। আমি বক্তব্য রাখার সময় হঠাৎ করে এই অনুষ্ঠানে অপর এক দলের নেতা উপস্থিত হন। আমি বক্তব্য শেষ করে আমার জন্য রাখা নির্দিষ্ট আসনে গিয়ে বসি। এবং অপর দলের নেতা আমাকে নমস্কার জানানোয় আমিও সৌজন্যের খাতিরে নমস্কার জানাই। আর এই দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করে কিছু সংবাদ মাধ্যম বিকৃত খবর পরিবেশন করেন আমাকে নিয়ে।’
বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই সব বিকৃত খবর পরিবেশন করে আমার মানহানি করা হয়েছে। তাই আমি এইসব সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করছি শীঘ্রই। তিনি বলেন আমি কোন দলে থাকবো বা কোন দলে যাবো সেটাতো আমি স্থির করবো এবং নিজের মুখে আগে বলবো তার পর না হয় সেই খবর পরিবেশন করবেন। মনগড়া খবর কেন পরিবেশ করছেন তার ব্যখা সেইসব সংবাদ মাধ্যমকে দিতে হবে।