দেখতে অনেকটাই প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিপের মতো। নতুন আবিষ্কৃত ওই বায়ো-সেন্সর স্ট্রিপে এক ফোঁটা রক্তের বিন্দু ফেলে দিলেই বাড়িতে বসেই এবার জানা যাবে মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা কতখানি রয়েছে। কোন মহিলার রক্তে ক্যানসারের বায়ো মার্কার লেভেল প্রতি মিলি লিটারে ১৫ ন্যানোগ্রামের বেশি থাকলে সেই মহিলার স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা যে রয়েছে তার জন্য আগাম বার্তা দিতে পারে এই ডিভাইস। এই ডিভাইস থেকে সতর্ক বার্তা পেয়ে মহিলারা অঙ্কোলজিস্টের শরনাপন্ন হতে পারবেন। দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বায়ো টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট ও ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট যৌথ ভাবে গবেষণাগারে গত নয়মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বায়ো সেন্সর স্ট্রিপ বেসড ডিভাইস আবিষ্কার করল।

সোমবার দুর্গাপুরের এনআইটির বায়ো টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের গবেষক মনিদীপা ঘোষ, গবেষক সাগরিকা দিপ্তী ও ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের গবেষক চিরঞ্জীব কোলে ব্রেস্ট কার্সিনোমা বায়ো‌ মার্কার গবেষণায় যুক্ত তিন গবেষক স্তন ক্যানসার শনাক্তকরণ ডিভাইস আবিষ্কারের দাবি করেন। জানা গেছে, এই গবেষণায় এই দুই ডিপার্টমেন্টের ছাত্র-ছাত্রীরাও এই গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন। তিন গবেষকের দাবি, বায়ো ক্যান্সার ডিভাইস আবিষ্কারের ফলে খুব শীঘ্রই বাড়িতে বসেই বা স্বাস্থ্য শিবিরে মহিলারা এক ফোঁটা রক্ত এই ডিভাইসে ফেললেই জানতে পারবেন তাঁর শরীরে স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা। এনআইটি’র গবেষকদের দাবি এই গবেষণাটি আন্তর্জাতিক এক জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে। এনআইটি’র তিন গবেষকের দাবি এই ডিভাইসের বাজার দর হাজার দশেক টাকার মত হবে। তবে পরবর্তী সময়ে এই ডিভাইসটি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এনআইটি সূত্রে জানা গেছে, এই পরীক্ষার খরচ একশো টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে গ্রাম গঞ্জের মহিলারা ঘরে বসে বা স্বাস্থ্য শিবিরে খুব সহজেই নিজের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা নির্নয় করতে পারেন।

জানা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১,৬০,০০০ মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তার মধ্যে প্রায় ৮৭,০০০ মহিলার এই রোগে মৃত্যু হয়। কিন্তু বর্তমানে ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের জন্য ম্যামোগ্রাফি টেস্ট বেশ খরচ সাপেক্ষ এবং যন্ত্রণাদায়ক। অনেক মহিলাই এই ধরণের পরীক্ষা এড়িয়ে চলেন। গ্রাম-গঞ্জের মহিলাদের কাছে এই ধরণের পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। এনআইটি গবেষকদের আবিষ্কৃত এই ডিভাইসের মাধ্যমে স্বল্প খরচে সহজেই ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্তকরণ সম্ভব হবে। আর প্রাথমিক অবস্থায় ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়লে তা নিরাময় কারাও সম্ভব বলে জানা গেছে।





Like Us On Facebook