একটা সময় রেল লাইনের দু’পাশে দেখা যেত। কিন্তু এখন আর কেবলমাত্র রেল লাইনের পাশেই নয় গৃহস্থের বাড়ির উঠোনেও উঁকি দিচ্ছে বিষাক্ত আগাছা পার্থেনিয়াম। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে যেদিকে নজর যায় শুধু নজর কাড়ছে পার্থেনিয়ামের সবুজ হাতছানি। পার্থেনিয়াম আগাছা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপুরে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ। রাজ্যের অন্যান্য জায়গার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন পার্থেনিয়াম নিধনে উদ্যোগী হলেও দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের এই বিষয়ে কোন নজর নেই বলে অভিযোগ।
আদি বাসভূমি মেক্সিকো হলেও এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভয়ঙ্কর আগাছা। ভারতেও অনুপ্রবেশ ঘটেছে বহু বছর আগে। সাধারণত এক থেকে দেড় মিটার উচ্চতার ঝোপ জাতীয় এই পার্থেনিয়াম গাছে মেলে পার্থেনিন নামের ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং টক্সিন। এর পাতা, ফুলের রেণু, গাছের আঠা থেকে মানুষ, গবাদি পশু, ছোট শিশু সহ সবার উপর বিভিন্ন রকম ক্ষতিকারক প্রভাব রয়েছে। পার্থেনিয়ামের ফুলের রেণু বাতাসের মাধ্যমে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে যা মানব দেহে চর্মরোগ, জ্বর, হাঁপানির মতো রোগ সৃষ্টি করে। মানুষের হাতে পায়ে লাগলে চুলকানি শুরু হয় এবং তা থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। পার্থেনিয়াম ভরা জমিতে গবাদি পশু চরানো হলে পশদের শরীরে নানান উপসর্গ দেখা দেয়। বেশী পরিমাণে পার্থেনিয়াম খেয়ে ফেললে পশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পার্থেনিয়ামের বহু ক্ষতিকর দিক থাকলেও এর কিছু ঔষধিগুণও রয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে এই আগাছা থেকে আমাশয়, জ্বর, বদহজম, টিউমার সহ নানান ধরণের জটিল রোগের প্রতিষেধক তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। কম খরচে এই আগাছা মারতে নুন জল ব্যবহার করে ভালো ফল মেলে বলে জানা গেছে। পাতায় নুন জল স্প্রে করে এবং গোঁড়ায় নুন জল দিলে কয়েক দিনের মধ্যেই ধ্বংস হয় এই মারণ আগাছা।