৩৫ বছর ধরে কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসা করার পর দুর্গাপুরের বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথ ও কুষ্ঠ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ধ্রুব চক্রবর্তীকে তার চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুর্গাপুরের মেয়রের ঘনিষ্ঠরা খোদ দুর্গাপুর নগর নিগমে ডেকে ধমকি দিল বলে অভিযোগ। এই খবর চাউর হতেই শিল্পাঞ্চল জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। কুষ্ঠরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ধ্রুব চক্রবর্তী অভিযুক্তদের নামে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি, দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক ও দুর্গাপুর নগর নিগমের মেয়রের কাছে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, দুর্গাপুরের কুড়ুরিয়া ডাঙ্গায় কুষ্ঠরোগীদের আবাসস্থলে হোমিওপ্যথি চিকিৎসার দ্বারা কুষ্ঠরোগীদের সারিয়ে তুলছেন বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডা. ধ্রুব চক্রবর্তী। সোসাইটি ফর ওয়েলফেয়ার অফ দ্য হ্যান্ডিক্যাপড পারসনস নামে ডা. ধ্রুব চক্রবর্তীর সংস্থা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে সারা দেশ জুড়ে কুষ্ঠরোগ নিবারণে চিকিৎসা করছেন ডা. ধ্রুব চক্রবর্তীর। কিন্তু সম্প্রতি কুড়ুরিয়া ডাঙ্গায় ডা. ধ্রুব চক্রবর্তী প্রায় ৭০ জনের শরীরে কুষ্ঠ রোগের লক্ষ্মণ দেখতে পান বলে জানা গেছে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু’র নিয়মে দশ হাজারে একজনের অধিক। তাই ৮ নভেম্বর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন কুড়ুরিয়া ডাঙ্গায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও দুর্গাপুরের মহকুমাশাসককে নিয়ে একটি কুষ্ঠ রোগ নির্ণয় ও সচেতনতা শিবির আয়োজন করেন। এখানেই ঘটনার সূত্রপাত।
পরের দিন দুর্গাপুর নগর নিগম থেকে অতনু রুদ্র নামে এক ব্যক্তি ফোনে চিকিৎসকের সমস্ত নথি চেয়ে ডেকে পাঠান বলে অভিযোগ। এর পর কড়ুরিয়া ডাঙ্গায় ডা. ধ্রুব চক্রবর্তী কুষ্ঠরোগীদের চিকিৎসা করতে গেলে দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তির সিএ পরিচয় দিয়ে রানা ও নীলু নামে দুই ব্যক্তি ডা. ধ্রুব চক্রবর্তীকে কেবল কুষ্ঠরোগীদের কাছে যেতেই বাধা নয় গালি গালাজ করে গোটা ১১ নম্বর ওয়ার্ডেই ঢুকতে নিষেধ করেন এবং চিকিৎসকের সমস্ত শংসাপত্র নিয়ে ডিএমসিতে অতনু রুদ্রর সঙ্গে দেখা করার জন্য ধমকি দেয় বলে অভিযোগ। এর পর ওই চিকিৎসক কুড়ুরিয়া ডাঙ্গায় কুষ্ঠদের সেবা শুশ্রূষা বন্ধ করে দিয়ে দুর্গাপুরের মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে সমস্ত নথি নিয়ে যান। কিন্তু মেয়র ব্যস্ত থাকায় তার দপ্তর ডা. ধ্রুব চক্রবর্তীকে দেখা করার সময় দেয়নি বলে অভিযোগ।
এদিকে মেয়রের কার্যালয়ের পাশে ডেকে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি রানা ও নীলু ফের চিকিৎসকের যাবতীয় শংসাপত্র চেয়ে গালিগালাজ সহযোগে ধমকি দেয় বলে অভিযোগ। এর পরই ওই চিকিৎসক জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি, দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা ও দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা গেছে। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, বিষয়টি হোমিওপ্যাথি ও অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে ধন্দ বলেই মনে হচ্ছে প্রাথমিক ভাবে। মেয়র সাহেবের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে। কমিশনারকেও বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে ডা. ধ্রুব চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আর্ত মানুষের সেবা করে শেষে এই অপমান পাওনা ছিল এটা ভাবতেই পারছি না।