চোর সন্দেহে এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে গণপিটুনি দেওয়ায় অপমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ভাতার থানার রাধানগর গ্রামে। মৃত যুবকের নাম সেখ আকবর আলি (৩২)। পেশায় তিনি ক্ষেতমজুর ছিলেন। মৃতের স্ত্রী রসুলা বেগম এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ভাতার থানার বিজয়পুর গ্রামের বাসিন্দা ৭জনের বিরুদ্ধে ভাতার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। ভাতার থানার পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
রসুলা বেগম জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের ৫জন সদস্যের মধ্যে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তাঁর স্বামী। দিনমজুর, ক্ষেতমজুরের কাজ করে কোনরকমে সংসার চালাচ্ছিলেন। এই অবস্থায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রামের একজনের বাড়ি থেকে ৪ হাজার টাকা চুরি যায়। পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে ৭জন যুবক এসে তাঁর স্বামীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁরা গ্রামের মসজিদের পাশে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে আকবর আলিকে বেধড়ক মারধর করে। তিনি আরও জানান, এরপরই বাড়ি থেকে ৪ হাজার টাকা নিয়ে গিয়ে মারধরে লিপ্ত যুবকদের হাতে তুলে দিয়ে আকবর আলিকে মারের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
রসুলা বেগম জানিয়েছেন, তিনি তাঁর স্বামীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরই মারধরে জড়িতরা তাঁর বাড়িতে এসে জানিয়ে যান, যে টাকা চুরি গিয়েছিল সেই টাকা তারা অন্য জায়গা থেকে উদ্ধার করেছেন। তাই রসুলা বেগমদের দেওয়া ৪ হাজার টাকা তাঁরা ফেরত দিতে চান। যদিও তার থেকে ৫০০ টাকা তারা ফিস্ট করার জন্য কেটে ৩৫০০ টাকা ফেরত দেন রসুলা বেগমকে। একইসঙ্গে অভিযুক্তরা আকবর আলিকে মিথ্যা অপবাদে মারধোর করার ঘটনায় ক্ষমাও চেয়ে যান। কিন্তু সেখ আকবর আলিকে মিথ্যা চুরির অপবাদ দেওয়ায় তিনি তা সহ্য করতে না পেরে কিছুক্ষণ পরেই ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাকে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতাল এবং পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। রসুলা বেগম জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ৭জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।