একসময় বন্দুক হাতে এলাকা শাসন করতেন যিনি তিনি এখন বন্দুক ছেড়ে দোতারা হাতে বাউল গানের মহিমা ছড়িয়ে মানুষের মন জয় করছেন। অবিভক্ত মেদিনীপুরের শালবনী থানার তৎকালীন পুলিশ আধিকারিক একদিন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালালে দু’জনের মৃত্যু হয়, এরপরই মনের পরিবর্তন ঘটায় তিনি পুলিশের চাকরি ছেড়ে এখন বাউল গানে মজে দেহতত্ত্বের গান শুনিয়ে চলেছেন। দুর্গাপুরের কাঁকসায় মহাকাল আশ্রমে বাউল গানের আখড়ায় এসে এই দাবি করেন পুলিশ আধিকারিক থেকে বাউল শিল্পী হয়ে ওঠা অভিজিৎ চক্রবর্তী।
নিজেকে অবিভক্ত মেদিনীপুরের শালবনী থানার তৎকালীন পুলিশ আধিকারিক বলে অভিজিৎ চক্রবর্তী নামে ওই বাউল বলেন, ‘আমি ১৯৯২ সালে এক বিক্ষোভ সমাবেশে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি করে দুই জনকে মেরে ফেলার পর আমার জীবনে প্রচুর অনুশোচনা হয়। আমি বরাবরই বাউল গান করতাম, তবে পুলিশের চাকরি করায় প্রচুর নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকায় বাউল গানকে কখনও প্রফেশন হিসেবে নিতে পারিনি। আমার ছোড়া গুলিতে দু’জনের মৃত্যুর পর অনুশোচনায় আমার জীবনে পরিবর্তন আসে। দেহতত্ত্ব যেহেতু বাউল গানের আধার তাই আমার জীবনেও পরিবর্তন এসে যায়। পরিবারের বাধা উপেক্ষা করে ২০১৬ সালে ৩১ ফেব্রুয়ারি বন্দুক আর খাকি উর্দির চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে হাতে দোতারা আর গেরুয়াকে সম্বল করে মানুষকে দেহতত্ত্বের গান শোনাতে আখড়ায় আখড়ায় ঘুরতে থাকি। পুলিশের চাকরি ছাড়ার সেদিনের কঠিন সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল সেটা আজ বুঝতে পারি। আমি এখন সমস্ত বেড়াজাল থেকে মুক্ত। আখড়ায় আখড়ায় দেহতত্ত্ব নিয়ে বাউল গানের মধ্যেই আমার জীবনের তরী ভেসে চলেছে।