করোনার কারণে এবারও মেলা বন্ধ হওয়ায় হতাশার সুর পাণ্ডবেশ্বরের পঞ্চপাণ্ডব মন্দির চত্বরে। করোনা অতিমারির কারণে পরপর দু’বছর বন্ধ হয়ে গেল পাণ্ডবেশ্বরের সুপ্রাচীন পঞ্চপাণ্ডব মন্দিরে পৌষ সংক্রান্তির মেলা। কথিত আছে, মহাভারতের পঞ্চপান্ডব অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এসেছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের এই এলাকায়। এখানে এসে তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেন শিবলিঙ্গের। কথিত আছে সেই সময় থেকেই চলে আসছে এই শিবলিঙ্গের পুজো অর্চনা। জনশ্রুতি আছে, পঞ্চপাণ্ডবের উপস্থিতিতির জন্যই পরবর্তীকালে এই এলাকার নাম হয় পাণ্ডবেশ্বর। পঞ্চপাণ্ডব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গের এই মন্দিরটি আজও পঞ্চপাণ্ডব মন্দির নামেই পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকেই পৌষ মাসের সংক্রান্তির দিন বসে পাণ্ডবেশ্বরের এই পঞ্চপাণ্ডব মন্দিরে গ্রামীণ মেলা। মেলাকে ঘিরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভিড় থাকে দেখার মতো। তার সঙ্গে অজয় নদে মকর স্নান করার পুণ্যার্থীর ভিড় থাকে।
পঞ্চপাণ্ডব মন্দিরের সেবাইত দেবানন্দন সরণদেব জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই এই মেলা থেকে যে রোজগার হয় তাতেই চলে মন্দির ও মঠের সারা বছরের কাজকর্ম। কিন্তু বিগত দুই বছর করোনা অতিমারির কারণে বন্ধ হয়েছে মেলা। যার ফলে মন্দিরের খরচ চালানোয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের। একদিকে যেমন এলাকার মানুষ মেলা থেকে বঞ্চিত, অন্যদিকে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা যাঁদের রুজিরুটি এইসব মেলাকে ঘিরেই চলে তাঁরাও সমস্যায় পড়েছেন। করোনার কারণে প্রশাসনের নির্দেশে এ বছরও বন্ধ হয়েছে মেলা। মেলায় দোকান দিতে আসা গুড্ডু আনসারি নামে এক ব্যবসায়ী বিষাদের সুরে জানান, জয়দেব কেঁদুলির মতো এক দিনের জন্যও যদি মেলার অনুমতি দিত প্রশাসন তাহলে সামান্য হলেও রুজিরুটি জুটত তাঁদের। যদিও এত কিছু সমস্যার পরও মন্দিরের সেবাইত জানান, আগে মানুষের জীবন, মেলা তো আবার আসবে। তাই আগামী বছর সবকিছু স্বাভাবিক হোক, দুরারোগ্য ব্যাধি দূরে যাক, মেলা আগামী বছর আরও ভালো করে হবে বলেই আশা করছি।