কাঁকসার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথ দেখতে একসময় দূরদূরান্ত থেকে দর্শক সমাগম হত। কয়েক টন ওজনের এই পিতলের রথটি তৈরি করেছিলেন কাঁকসার বনকাটির লাক্ষা ব্যবসায়ী শশীভূষণ মুখোপাধ্যায়। শোনা যায়, শশীভূষণ মুখোপাধ্যায় লাক্ষা ব্যবসা করতে অজয় নদ দিয়ে নৌকা যোগে গঙ্গা পেরিয়ে কলকাতা যেতেন লাক্ষা ব্যবসা করতে। আর সেই সময় ব্যবসা লাভজনক হলে লাভের একটা অংশ সমাজের ভাল কাজে ব্যবহার করার রীতি ছিল। সেই রীতি অনুযায়ী বনকাটি গ্রামের লাক্ষা ব্যবসায়ী শশীভূষণ মুখোপাধ্যায় গ্রামবাসীদের জন্য একটি সুসজ্জিত পিতলের রথ উপহার দেন বলে শোনা যায়।
রথের গায়ে চার যুগের অর্থাৎ, সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি যুগের বিভিন্ন কাহিনী খোদাই করা আছে। রথযাত্রা উৎসবে গ্রামবাসীরা এই রথের দড়িতে টান দিয়ে পুণ্য লাভ করতেন। এই ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথকে কেন্দ্র করে নানান কাহিনী শোনা যায় বনকাটি গ্রামে। এই পিতলের রথের নির্মাণে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়েও অনেক গল্প কথা রয়েছে। কিন্তু এই ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথ এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হতে বসেছে। প্রতিবছর এই রথেই রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হলেও কেবলমাত্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যেমন নষ্ট হতে বসেছে এই ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথটি, তেমনই কয়েক টন ওজনের পিতলের রথটির গা থেকে পিতলের অংশ খুলে নেওয়ার আশঙ্কাও করছেন গ্রামবাসীরা। শশীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের উত্তরসূরী না থাকলেও তাঁর আত্মীয় পরিজনদের এই ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথকে সারা বছর ধরে আগলে রাখা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদিও এই রথটিকে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন বা কোন ব্যক্তি এখনও পর্যন্ত তেমন আগ্রহ দেখায়নি তথাপি গ্রামবাসীরা চান সকলের চেষ্টায় এই ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথটির সঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হোক।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?