রাইস মিলের পরিত্যক্ত ছাই, যার দূষণে মানুষ জেরবার সেই ছাইকে এবার ইলেকট্রনিক্স, পেন্টিং ও রাসায়নিক সার শিল্পে কাজে লাগানোর পথ দেখাল দুর্গাপুরের দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার অধ্যাপকরা। দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ও সিএমইআরআই-এর অধ্যাপকরা রাইস মিলের পরিত্যক্ত ছাই নিয়ে গবেষণাগারে দীর্ঘ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ছাই থেকে সিলিকা উপাদান বের করে এবং পড়ে থাকা কার্বনকে বিভিন্ন কাজে লাগানোর উপায় বের করেছেন।
রাইস মিলের বর্জ্য, বিশেষ করে ছাই ও পচা জলের দূষণ নিয়ে রাইস মিল সংলগ্ন বাসিন্দারা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে ভুরি ভুরি অভিযোগ জানান। এতদিন পর্যন্ত এই দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও রাইস মিল মালিকরা চিন্তায় ছিলেন। এনআইটি ও সিএমইআরআই-এর যৌথ গবেষণায় সাফল্য মেলায় রাইস মিলের বর্জ্যের দূষণ থেকে পরিত্রাণ পেতে চলেছে মানুষ।
এনআইটি ও সিএমইআরআই সূত্রে জানা গেছে, কেবল মাত্র রাইস মিলের ছাই থেকে সিলিকা উপাদানই নয় রাইস মিলে ধান সেদ্ধর পর পরিত্যক্ত জলকে ফের ট্রিটমেন্ট প্লান্টের সাহায্যে রাইস মিলে ব্যবহারযোগ্য করে তোলার কৌশলও বের করে ফেলেছেন এনআইটি ও সিএমইআরআই-এর গবেষকরা। জানা গেছে এই অসাধ্য সাধন করেছেন এনআইটি’র কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক তমাল মন্ডল এবং বায়োটেকনোলজির অধাপক অপূর্ব দে। এই দুই অধ্যাপক পরিত্যক্ত রাইস মিলের ছাইকে পরীক্ষাগারে পর্যবেক্ষণ করে সিলিকা উপাদান বের করার পথ খোঁজেন। তাছাড়া রাইস মিলের পরিত্যক্ত দূষিত জল ল্যাবেরটরিতে পরীক্ষা করে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যমে কিভাবে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা যায় সেই কৌশল বের করতে সাহায্য করেন এনআইটি’র দুই অধ্যাপক ডালিয়া দাশগুপ্ত মন্ডল ও অপূর্ব দে। সমগ্র গবেষণাটিতে সহযোগিতা করেন সিএমইআরআই-এর অধ্যাপক প্রদীপ কুমার চট্টোপাধ্যায়। তাছাড়া এনআইটি’র গবেষণারত ছাত্রছাত্রীরাও এই গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন বলে এনআইটি সূত্রে জানা গেছে। এত দিন রাইস মিলের পরিত্যক্ত ছাইয়ের দূষণ নিয়ে এলাকার মানুষ জেরবার ছিল। একই ভাবে রাইস মিলের মালিকরাও বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু রাইস মিলের সেই পরিত্যক্ত ছাই ও জলকে ব্যবহার করার ব্যাপারে এনআইটি ও সিএমইআরআই-এর গবেষণাগারে সাফল্য মেলায় এখন সবপক্ষই খুশি।