বিশ্বের উষ্ণায়ন, পরিবেশ দূষণ এবং জল সঙ্কট রোধে দ্রুততার সঙ্গে গাছ লাগানোকেই যখন পথ বলে মনে করছেন সমাজবিদরা, সেই সময় পরিবেশ রক্ষায় মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে নিজেদের বিয়ের যাবতীয় আচারের সঙ্গে বৃক্ষরোপণ পর্ব জুড়ে দিয়ে এক নজরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মেমারির মামুদপুরের কৌশিক ঘোষ এবং তাঁর নববধূ মৌমিতা।
রবিবার মামুদপুরের বাসিন্দা কৌশিকের সঙ্গে বিয়ে হয় মেমারির কানপুরের বাসিন্দা মৌমিতা সরকারের। সোমবার সকালেই তাঁরা বিয়ে করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বিয়ের আচারের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা স্থাপন করলেন দৃষ্টান্ত। এদিন নববধু শ্বশুরবাড়িতে ঢোকার আগে লাগালেন ফুল ও ফলের ১০০টি চারা গাছ। আর তাঁদের এই উদ্যোগে এগিয়ে এলেন পাল্লারোডের পল্লীমঙ্গল সমিতি। এদিন সমিতির সদস্যরাই ব্যবস্থা করলেন গাছ লাগানোর জায়গা।
নব্য বর কৌশিক ঘোষ জানিয়েছেন, পৃথিবী জুড়ে উষ্ণায়ণের এই সমস্যার মোকাবিলায় তিনিও কিছু করতে চাইছিলেন। ভেবেও ছিলেন এই গাছ লাগানোর বিষয়টি। কিন্তু কোথায় গাছ লাগাবেন, কিভাবে তার পরিচর্যা হবে? এই সব প্রশ্নই যখন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল সেই সময় এগিয়ে এলেন পল্লীমঙ্গল সমিতির সদস্যরা। তাঁরাই পার্থেনিয়ামে ভরা একটি জায়গা রীতিমত পরিষ্কার করে গাছ লাগানোর উপযুক্ত করে দেন। তারাই এগিয়ে এসে কৌশিক ঘোষ ও মৌমিতা ঘোষের এই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের পাশে দাঁড়ান। এখন থেকে তাঁদের সঙ্গে পল্লীমঙ্গল সমিতিও এই সমস্ত গাছ পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন পল্লীমঙ্গল সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার।
কৌশিকবাবু জানিয়েছেন,তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য যে খরচ হয়েছে তার মাত্র ১ শতাংশেরও কম খরচ হয়েছে এই গাছ লাগানোর কর্মসূচিতে। কিন্তু ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবেই খুব আনন্দ হচ্ছে। অন্যদিকে, এদিন পল্লীমঙ্গল সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার জানিয়েছেন, কৌশিকবাবুর এই ভাবনার কথা শুনেই তাঁরা এগিয়ে এসেছেন। যেহেতু তাঁরা সামাজিক কাজ করে থাকেন তাই তাঁরাও এই কাজে অংশীদার হতে পেরে তাঁদের খুব ভাল লাগছে। অপরদিকে, বর্ধমানের গাছ মাষ্টার অরূপ চৌধুরী জানিয়েছেন, এ একেবারেই নজীরবিহীন সিদ্ধান্ত। প্রত্যেকেই যদি এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে গোটা পৃথিবীর সামনে যে বিপদ ঘনিয়ে আসছে তা এড়ানো সহজ হবে।
বর্ধমান ডট কম-এর খবর নিয়মিত আপনার ফেসবুকে দেখতে চান?