গতবছর ৮ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার সময় তাঁর হাতে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছিল বর্ধমান জেলা কোর্ট ও কালেক্টরেট টাইপিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু গত এক বছরেও সেই সমস্যা না মেটায় বৃহস্পতিবার ফের মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তাঁদের দাবিপত্র তুলে দিতে চলেছেন ওই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। বুধবার সংগঠনের সম্পাদক গৌরীশংকর ঘোষ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তাঁদের দাবিপত্র তুলে দেবেন। মূলত দীর্ঘকাল ধরে বর্ধমান কোর্ট চত্বরে তাঁরা টাইপিষ্ট হিসাবে কাজ করলেও তাঁদের বসার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। সম্প্রতি কালেক্টরেট চত্বরকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সরে যাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবর্তে তাঁরা কোথায় বসবেন সে ব্যাপারে কিছুই জানানো হচ্ছে না। ফলে তাঁরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। আক্ষেপের সুরেই গৌরীবাবু জানিয়েছেন, বর্তমানে কম্পিউটারের যুগে এই ইংরাজী ও বাংলা টাইপ মেশিন একেবারেই অচল। ফলে কার্যত বর্তমান জেনারেশনই শেষ জেনারেশন যাঁরা এই মেশিনের মাধ্যমে তীব্র কষ্টের মধ্যে সংসার প্রতিপালন করে চলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যত প্রজন্মরা আর কেউই এই পেশায় আসছেন না। ফলে কার্যতই টাইপ রাইটারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজেই গেছে বলা চলে। গৌরীবাবু জানিয়েছেন, শুধু এটাই নয়,প্রতিদিন তাঁদের যে রোজগার হয় তাতে সংসার চলে না। ফলে কোনো কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে তাঁদের চিকিৎসা করারও সামর্থ্য অনেকেরই নেই। এমতবস্থায় গতবছরই প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার সময় তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের বসার নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা সহ কয়েকদফা দাবি জানিয়েছিলেন। একই দাবি তাঁরা জেলা প্রশাসনের সমস্ত স্তরেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য পেশার মতই টাইপিষ্টদের ক্ষেত্রেও পেনশন স্কীম, স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প, শিক্ষার ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা প্রভৃতি প্রকল্প প্রদান করার ফের দাবি জানাবেন তাঁরা এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

Like Us On Facebook