শুক্রবার রাত থেকে লাগাতার বৃষ্টির জেরে পূর্ব বর্ধমান জেলার বেশ কিছু নীচু এলাকা জলমগ্ন হল। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মত কিছু নেই। কোথাও কোনো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। অন্যদিকে, শুক্রবার রাত থেকে লাগাতার বর্ষণের জেরে বর্ধমান ২ ব্লকের বেশ কিছু কাঁচা বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের আধিকারিক বামদেব কুণ্ডু জানান। তিনি জানান,শনিবার রাত্রে ডিভিসি থেকে ১৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। দামোদরের জল বিপদ সীমার অনেক নীচে রয়েছে। বিপদসীমার নিচে দিয়ে জল যাচ্ছে অজয় ভাগীরথীতেও।

জেলা প্রশাসন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, রবিবার দুপুর পর্যন্ত অজয় নদীতে বিপদসীমার ২.০১ মিটার নিচে দিয়ে জল যাচ্ছে। ভাগীরথীতে কাটোয়ায় ২.০১ মিটার নিচে দিয়ে জল যাচ্ছে। দামোদরে বর্ধমানের ইদিলপুরে বিপদসীমার ৪.৫৮ মিটার নিচে দিয়ে জল যাচ্ছে। জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় বর্ধমান শহরে বৃষ্টি হয়েছে ৭৮মিলিমিটার। এদিকে, শুক্রবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি জেরে বর্ধমান শহরের বেশ কিছু নীচু এলাকায় জল জমে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়। রবিবার সকালেও বর্ধমান শহরের শূলিপুকুর এলাকার রাস্তা জলমগ্নে ছিল। শহরের নীচু জায়গাতে বৃষ্টির জমা জল বার হতে না পারায় কার্যত ঘেরা টোপের মধ্যে পড়েন বাসিন্দারা।

শনিবারই শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পার্কাস রোডে কার্যত হাঁটুর নীচে জল জমে যায়। যদিও শহরের বহু জায়গাতেই জল জমলেও দ্রুততার সঙ্গে তা নেমে গেলেও কিছু কিছু এলাকায় জলনিকাশী ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়। বর্ধমান সদরের বর্ধমান ২নং ব্লকের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। জলমগ্ন হয়েছে বর্ধমান ১নং ব্লকেরও বেশ কিছু জায়গা। বর্ধমান শহর লাগোয়া বাজেপ্রতাপপুর, ডাঙাপাড়া প্রভৃতি এলাকায় রবিবারও জমা জলে বির্পযস্ত হয়েছে সেখানকার সাধারণ জনজীবন। টানা বৃষ্টির জেরে ডাঙাপাড়া এলাকায় বেশ কিছু কাঁচা বাড়ি ধ্বসে পড়েছে। যদিও জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের আধিকারিক বামদেব কুণ্ডু জানান, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও আসেনি। কিছু কাঁচা বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। জানা গেছে,কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রাম-১ব্লকের কিছু অংশ, কাটোয়া-২ ব্লকের কিছু অংশ এবং কালনা মহকুমার পূর্বস্থলী-২ এবং মন্তেশ্বরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে।

অপরদিকে,খড়ি নদীর জল বাড়ায় রবিবার সকাল থেকেই ভাতার থানার নর্জা মোড়ের অস্থায়ী ব্রীজের প্রায় ১ ফুট ওপর দিয়ে জল যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এদিনই ভাতারের বিডিও প্রলয় মণ্ডল এবং পূর্ত দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ব্রীজের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি জানান, নর্জা মোড়ে খড়ি নদীর ওপর নির্মীয়মাণ স্থায়ী সেতুর কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশই হয়ে গেছে। অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ দুদিকেই সামান্য কিছু বাকি রয়েছে। আপাতত ছোট গাড়ি ওই ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করছে। এদিকে, অস্থায়ী ব্রীজের ওপর দিয়ে জল গেলেও সেখান দিকেই ঝুঁকি নিয়ে বাস, লরী সহ বড় গাড়ি যাতায়াত করছে। ভজনবাবু জানান, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে মূল ব্রীজ দিয়েই বড় গাড়ি চলাচলের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাড়াতাড়িই।

Like Us On Facebook