গ্রীণ ট্রাইবুনালের নির্দেশ থেকে রাজ্য সরকারের মন্ত্রীর হুঁশিয়ারী সত্ত্বেও বর্ধমানের মেমারি থানার পাল্লা ক্যাম্প এলাকায় দামোদরের বুক থেকে অবৈধ বালি তোলা চলছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গোটা এলাকার মানুষ দফায় দফায় ক্ষোভ বিক্ষোভ জানালেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানানোরও উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় মানুষ।
পাল্লা ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা অর্ধেন্দু সর্দার জানিয়েছেন, এই পাল্লা ক্যাম্প এলাকায় দামোদরের চড়ে চলছে পরপর বেশ কয়েকটি বালি খাদান। আদপেই এগুলি বৈধ কিনা তাও তাঁরা জানতে পারছেন না। এব্যাপারে প্রশাসনিক স্তরেও তাঁরা বারবার অভিযোগ জানিয়েছেন কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। তাঁরা সমস্ত বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দামোদরের বুক থেকে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে জেসিবি মেশিনের মাধ্যমে তোলা হচ্ছে বালি। এরপর রীতিমত ওভারলোড করে বালির ট্রাকগুলিকে নিয়ে এসে জল ঝরানোর জন্য দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ মূল রাস্তার ওপর। এরফলে রাস্তা খারাপ হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। এমনকি রাস্তার ওপর দিয়ে এই সমস্ত ওভারলোডিং ট্রাকগুলি জল ফেলতে ফেলতে যাবার ফলে পাল্লা ষ্টেশন থেকে পাল্লা ক্যাম্পের মাঝে দুটি কালভার্ট ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছে। এর ফলে যেকোনো সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এরই পাশাপাশি গোটা রাস্তায় অসংখ্য গর্ত ও সবসময়ের জন্যই জল-কাদায় ভর্তি হয়ে থাকায় প্রায়শই সাধারণ পথচলতি মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি এই ঘটনায় এলাকার ছাত্রছাত্রী সহ এলাকার মানুষ দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধও করেন। পরে বিডিওর হস্তক্ষেপে ও আশ্বাসে রাস্তা অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু তারপরে ফের সেই একই অবস্থা চলছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচির কাজ খতিয়ে দেখতে এসে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় সরাসরি জানিয়ে যান, ইতিমধ্যেই বালিঘাট নিলামের জন্য ই-টেণ্ডার ডাকা হয়েছে। সেখানে যারা অনুমোদন পেয়েছেন তাদের এলাকাও চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। তার বাইরে যে সমস্ত ঘাট চলছে সেগুলি দ্রুত বন্ধ করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসককে। একইসঙ্গে নদীর বুকে বাঁধ দিয়ে জলের গতিপথ ঘুরিয়ে বালি তোলার ঘটনারও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।