সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের আদিবাসী ছাত্রী হিসাবে প্রথম স্থান অধিকার করল দুর্গাপুরের কাঁকসার একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সীমা সোরেন। সীমার প্রাপ্ত নম্বর ৪০৭। সীমা বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সীমা একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলে পড়ছে। বাবা শিবলাল সোরেন বীরভূমের জেলাশাসক কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। মা পূর্ণিমা সোরেন গৃহবধু।
আর্থিক অস্বচ্ছলতাকে সঙ্গী করে বড় হয়ে ওঠা আদিবাসী পড়ুয়া সীমা সোরেন আইনের পাঠ নিয়ে একজন নামজাদা বিচারক হতে চায়। আদিবাসী নারীদের উন্নয়ন এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকার ও ন্যায্য বিচার দেওয়াই প্রধান লক্ষ্য সীমার। সীমা সোরেন তার সাফল্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করে।
একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক হীরন্ময় বন্দোপাধ্যায় বলেন, সীমা পড়াশোনায় একনিষ্ঠ। সীমার সাফল্যে স্কুলের নাম উজ্জ্বল হল। হীরন্ময় বাবুও সীমার সাফল্য যে মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহের প্রভাব সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হীরন্ময় বাবু বলেন, কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী স্কুলের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের স্কুলে এসে পড়েন। স্কুলের সার্বিক উন্নতির জন্য প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপরেই আমরা সকলে উৎসাহিত হয়ে স্কুলের পঠনপাঠনের মান বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এবং পড়ুয়ারাও প্রবল উৎসাহে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে। হীরন্ময় বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, সীমা সোরেনের সাফল্য আজ মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহের ফসল।
সীমার বাবা শিবলাল সোরেন বলেন, সীমা কেবলমাত্র দুর্গাপুরের নয় বীরভূমের মুখও উজ্জ্বল করল। সীমার সাফল্যের খবরে প্রশাসনিক আধিকারিকরাও খুশি হয়ে সীমাকে শুভেচ্ছা জানাতে শুক্রবার একলব্য স্কুলে ছুটে আসেন। দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গাপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ সামন্ত, কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস ও স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিকরা সীমাকে ফুলের তোড়া দিয়ে মিষ্টি মুখ করান এবং শুভেচ্ছা জানান।
জানা গেছে, বাঁকুড়ার রাইপুরের লাকাটা গ্রামের বাসিন্দা মন্ডলকুলি নেতাজী বিদ্যাপীঠের ছাত্র এপ্রিল সোরেন সাঁওতালি ভাষায় ও অলচিকি লিপিতে রাজ্যের প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সীমা সেই হিসেবে দ্বিতীয় হলেও ছাত্রী হিসেবে রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এপ্রিল সোরেনের প্রাপ্ত নম্বর ৪২৬।