বুধবার বিকালে নদীয়া জেলা সফর সেরে আগাম থাকা খবর অনুসারে খোদ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পূর্ব বর্ধমানের মেমারির সাতগেছিয়ায় রঞ্জিত ভট্টাচার্য্যের রেশন শপে (৪২নং) হানা দেন। সেখান থেকে চালের নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। কোথা থেকে সেই চাল তিনি নিয়ে এসেছেন সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। কথা বলেন কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গেও। রেশনের মাল নিয়ে কোন অভিযোগ আছে কিনা তাও যাচাই করেন। এরপরই ওই চালের নমুনা নিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হানা দেন বেগুনিয়া গ্রামের এক ডিস্ট্রিবিউটরের গোডাউনে। গোডাউনে পাঞ্জাব, জলন্ধর, হরিয়ানার চাল দেখতে পাওয়ায় রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ওই ডিস্ট্রিবিউটরের ৪টি গোডাউনই সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এরপরই জেলা খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকদের এব্যাপারে জোরদার অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান।
জেলা খাদ্য নিয়ামক দেবমাল্য বসু জানিয়েছেন, বুধবার থেকে ওই গোডাউনে অভিযান চালানো শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়েছে। কিভাবে ভিন রাজ্যের চাল মজুদ ছিল সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, মন্ত্রীর নির্দেশের পরই বৃহস্পতিবার বর্ধমানের মাটি তীর্থ কৃষি কথা প্রাঙ্গণ লাগোয়া রাজ্য সরকারের গোডাউনে রেশনের কয়েকজন ডিস্ট্রিবিউটর চাল নিতে গিয়ে চালের মান খারাপ বলে চাল নিতে অস্বীকার করায় নতুন করে বিতর্ক দেখা দিল।
এদিকে, ওয়েষ্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক পরেশ হাজরা জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই কার্যত প্রতি মাসেই এই ধরণের অনিয়ম দূর করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছেন। তাঁরাও চাইছেন সরকার এব্যাপারে জোরদার অভিযান চালান। কিভাবে রাইস মিল থেকে ভাল চাল সরকারি গোডাউনে মজুদ করার পর ডিস্ট্রিবিউটরদের দেওয়া সেই চালের বদলে ভিন রাজ্যের চাল হয়ে যাচ্ছে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার। তাঁরা চান কোনোভাবেই সাধারণ মানুষ যেন তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হন। পরেশবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা সমস্ত রেশন শপের মালিককেই স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরেও যদি কেউ অনৈতিক কাজ করেন তার দায়ভার তাঁরই। সংগঠন তাঁদের পাশে দাঁড়াবে না। কিন্তু যদি অহেতুক বা অন্যায়ভাবে রেশন শপকে আসামী করা হয় তাহলে সংগঠন তাদের জন্য লড়াই করবে। প্রসঙ্গত, তিনি জানান, রেশনের মাল সরবরাহের ক্ষেত্রে তাঁরা রেশন শপের মালিকদের জানিয়েছেন, যে মাল সরকার দিচ্ছে তার নমুনা নিয়ে তা প্রতি মূহূর্তে সরকারি দপ্তরে জানাতে। এতে তাদের স্বচ্ছতা যেমন বজায় থাকবে, তেমনই সরকারও দেখতে পাবে কি মাল তারা রেশন দোকানের মাধ্যমে বিলি করছেন। একইসঙ্গে স্থানীয় বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধির হাতেও সেই নমুনা তুলে দেবার নির্দেশ দিয়েছেন।