বছরের পর বছর ধরে পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালিয়েও বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানের সীমানায় থাকা দামোদর নদের চরে বন্ধ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না বেআইনি পোস্ত চাষ। এবার ওই সমস্ত এলাকায় কত জমিতে পোস্ত চাষ হয়েছে তার আঁচ পেতে ড্রোন ক্যামেরার ব্যবহার করছে আবগারি দফতর। শুক্রবার দামোদরের চরে ড্রোন উড়িয়ে ওই সমস্ত এলাকায় পোস্ত চাষের জমি চিহ্নিতকরণের কাজ চালায় আবগারি দফতর এবং পুলিশ প্রশাসন। ড্রোনের থেকে পাওয়া ছবির ভিত্তিতে আগামী দিনে পোস্ত চাষ ঠেকানোর অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হবে বলে জানিয়েছেন আবগারি দফতরের আধিকারিকরা।

বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার সীমানায় রয়েছে দামোদর নদ। বর্ষার সময় দামোদর নদ দুকূল ভাসিয়ে বয়ে গেলেও বর্ষা শেষ হতেই দামোদরের বুকে বিভিন্ন জায়গায় জেগে ওঠে চর। বিশাল বিশাল সেই চরের জমি অত্যন্ত উর্বর হওয়ায় সেই জমিতে বিভিন্ন ধরণের ফসল ফলান দামোদরের দু’পাড়ের মানুষ। এই সব ফসলের মাঝেই চরের জমিতে লুকিয়ে পোস্ত চাষ করে আসছেন একদল অসাধু কৃষক। মাদক তৈরির কাজে ব্যবহার হয় পোস্তর খোলা থেকে শুরু করে পোস্তর উপক্ষার। স্বাভাবিক ভাবে বেআইনি ভাবে পোস্ত চাষ করে বিপুল অঙ্কের টাকা ঘরে তোলেন ওই অসাধু কৃষকরা। আবগারি দফতর প্রতি বছর নিয়ম করে চরের জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে পোস্ত গাছ নষ্ট করে দিলেও পরের বছর ফের বিঘার পর বিঘা জমিতে ফের লুকিয়ে ওই চাষ করতে শুরু করেন অসাধু কৃষকরা। দামোদরের চর কোনো ব্যাক্তির মালিকানাধীন না হওয়ায় ওই অসাধু কৃষকদের চিহ্নিত করে তাঁদের শাস্তি দেওয়াও সম্ভব হয়না আবগারি দফতর ও প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই পোস্ত চাষের মরসুম শুরু হয়েছে।

সূত্রের খবর বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার অন্তর্গত দুর্গাচর মানা, মেজিয়া মানা, জপমালি সহ পশ্চিম বর্ধমানের বেশ কিছু এলাকা সহ বিভিন্ন গ্রাম লাগোয়া দামোদরের চরগুলিতে লুকিয়ে চুরিয়ে পোস্ত চাষ করতে শুরু করেছেন ওই অসাধু কৃষকরা। এবার আগেভাগে আকাশ পথে জমিগুলি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে আবগারি দফতর। শুক্রবার মেজিয়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় দামোদরের চরে ড্রোনের সাহায্যে আকাশ পথে জমিগুলি চিহ্নিতকরণের কাজ করেন আবগারি দফতরের আধিকারিকরা। বাঁকুড়া জেলার ডেপুটি এক্সাইজ কালেক্টর বিশ্বজিৎ ভক্ত জানিয়েছেন, নজরদাড়ি চালানোর জন্য এবার ড্রোনের সাহায্য নেওয়া হয়েছে এতে নজরদারি করতে অনেকটা সুবিধা হয়েছে। এর ফলে বেআইনি ভাবে পোস্ত চাষ অনেকটাই আটকানো সম্ভব হবে বলে আশা করছেন আধিকারিকরা।

Like Us On Facebook