শনিবার পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাড়ি ফিরে আদিবাসী সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করার জন্য কার্যত ব্রত নিলেন আরতি হেমব্রম। সাড়ে তিন বছর বাড়ি ছাড়া হয়ে থাকায় বাড়িতে সংসারের প্রয়োজনে অবশিষ্ট কিছুই তাঁরা ফিরে পাননি। পেয়েছেন সাড়ে তিন বছর আগে ফেলে যাওয়া একটি লণ্ঠনকে। শনিবার রাত্রে বহুবার চেষ্টা করেও তাকে জ্বালানো যায়নি। রবিবার সকালেই বাড়ি ফিরে আসা বাদল হেমব্রমদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মহিলা কমিশনের সদস্যা শিখা আদিত্য সরকারও। যদিও এদিন পুলিশের সামনেই সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেই বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে যান এলাকার বাদল হেমব্রমদের বিরুদ্ধাচারণকারী বিক্ষুব্ধরা।

সুনন্দা মুখোপাধ্যায় এদিন বাদল হেমব্রমের হাতে সাংসারিক দৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্য ৫ হাজার টাকাও তুলে দেন। সুনন্দাদেবী এদিন বলেন, তাঁর সঙ্গেই যেভাবে বিক্ষুব্ধরা আচরণ করছে তা থেকেই তিনি বুঝতে পারছেন কি ভয়ানক অত্যাচার হয়েছে বাদল হেমব্রমদের ওপর। অপরদিকে, মা আরতি হেমব্রমের নির্দেশে রবিবার সকালে সেই ঝরঝরে লণ্ঠনকেই প্রতীক হিসাবে খাড়া করে শপথ নিয়েছে সাতগেছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রিমা হেমব্রম। বাড়ির উঠোনে ইঁটের ওপর লণ্ঠনকে রেখে সে প্রতিজ্ঞা করেছে এই লণ্ঠনকেই সে জ্বালাবে। আর সে আদিবাসী সমাজ থেকে এই কুসংস্কার দূর করার জন্য লড়াই করবে। দিদির এই ব্রতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সীমা হেমব্রম সহ বাড়ির আরও দুই ক্ষুদে পড়ুয়া। ডাইনী অপবাদ দিয়ে বাড়ি ছেড়ে সাড়ে তিনবছরের যে জ্বালা সেই জ্বালাকেই পাথেয় করে আগামী দিনে সমাজকে বদলে দেবার বৃহত্তর লড়াইয়ে নামার শপথ নিয়েছে রীমা। যা দেখে এদিন খোদ রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনও তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন।

Like Us On Facebook