করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলির সাহায্যে এগিয়ে এলেন ভাতাড়ের রাধানগর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সেখ জানে আলম। তিনি তাঁর বেতনের টাকায় অসহায় করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলির বাড়িতে গিয়ে পৌছে দিচ্ছেন ওষুধপত্র থেকে পুষ্টিকর খাবার। করোনা আক্রান্ত কোনও পরিবার সমস্যার মধ্যে রয়েছেন খবর পেলেই তাঁদের বাড়ির সামনে পৌছে গিয়ে সহযোগিতা করছেন শেখ জানে আলম। করোনা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি পৌছে দিচ্ছেন মুরগির মাংস, দুধ, ডিম সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী ছাড়াও পৌঁছে দিয়ে আসছেন ওষুধপত্র থেকে মাস্ক-স্যানিটাইজার।
সাধারণত কোনও পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে সংক্রমণের ভয়ে সেই বাড়ির ত্রিসীমানায় পা দিচ্ছেন না প্রতিবেশীরা। এদিকে আক্রান্ত পরিবারটি হোম আইসোলেশনে থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে। সব থেকে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলিকে। একদিকে রুজি রোজগার বন্ধ, তার উপর পরিবারের কেউ করোনা সংক্রমিত হলে দু’বেলা খাবার জোটাতে গিয়ে কার্যত হিমসিম খেতে হচ্ছে। ওই সমস্ত অসহায় পরিবারগুলির কথা কানে যেতেই তাঁদের পাশে ত্রাতা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতাড় থানার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক শেখ জানে আলম।
রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ৩৪ বছরের শেখ জানে আলম ভাতাড়ের বড়বেলুন গ্রামের বড়কালী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাড়ি থেকে স্কুল মোটরবাইকে যাতায়াত করতেন। কিন্তু করোনা আবহে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। তবে ছুটি নেই শেখ জানে আলমের। তিনি তাঁর বাইক নিয়ে ঘুরছেন বড়বেলুন সহ আশপাশের গ্রামে। পরিচিতদের মাধ্যমে খবর পেলেই অসহায় পরিবারগুলির কাছে ত্রাতা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। সংক্রমণের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় পোশাক পড়েই মাস্টারমশাই করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলির বাড়ির দরজায় দরজায় গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন জীবনধারণের রসদ।
শেখ জানে আলম বলেন, “আমি সরকার থেকে বেতন পাই। এখন স্কুল বন্ধ। এই অতিমারির সময়ে যদি শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবি তাহলে সমাজের জন্য কি করলাম?’ তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের আশীর্বাদই আমাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করবে। আল্লাহ আমাদের এই কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার শক্তি দিন, শুধু এই প্রার্থনা করি।’