মেমারি স্টেট ব্যাঙ্কের ৮৪ লক্ষাধিক টাকা তছরুপের ঘটনায় শনিবার ধৃত ব্যাঙ্কের অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ ইনচার্জ তারক জয়সওয়ালকে হেফাজতে নিল পুলিশ। এদিন বর্ধমানের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয় তারক জয়সওয়ালকে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে চায় পুলিশ। সিজেএম রতন কুমার গুপ্তা ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের জুন মাসে মেমারি স্টেট ব্যাঙ্কে কাজে যোগ দেন তারক জয়সওয়াল। তার আগে তিনি ছিলেন বর্ধমান শহরের রাজবাটি স্টেট ব্যাঙ্ক শাখায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তারক জয়সওয়ালের টাকার প্রতি নেশা ছিল। কিভাবে কত দ্রুত টাকা কামানো যায় সে ব্যাপারে তিনি প্রায় নিয়মিতই লটারি টিকিট কাটতেন। এমনকি এক বন্ধুর সঙ্গে সম্প্রতি প্রোমোটারি ব্যবসাতেও নামার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর এই টাকার পিছনে ছুটে বেড়ানোর বিষয়টি তাঁর পরিবারের লোকজনও জানতেন। তাঁকে নাকি এব্যাপারে সাবধানও করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, মেমারি স্টেট ব্যাঙ্ক শাখা থেকে কয়েনের নামে করে ৮৪ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা তছরুপ করার ঘটনায় শুক্রবার নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তারক জয়সওয়াল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে তারক জয়সওয়াল স্বীকার করেছেন, মেমারি শাখায় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ অডিট করা হয়েছিল। তিনি কাজে যোগ দেন জুন মাসে। এরপর থেকেই কার্যত প্রতিদিনই তিনি ব্যাঙ্কে জমা টাকার হিসাবের গড়মিল করে টাকা সরাতে শুরু করেন। পুলিশ জেনেছে, তারকের নিয়মিত পানশালায় যাওয়ার অভ্যাসও ছিল। টাকার নেশায় সে তার বর্ধমান শহরের বাদামতলার পিতৃদত্ত সম্পত্তি বিক্রিও করে দেয়। সম্প্রতি মেমারিতে একটি ঘরও ভাড়া নেয় স্ত্রী ও এক বাচ্চাকে নিয়ে থাকতে শুরু করে। এদিকে, এই বিপুল পরিমাণ টাকা সরিয়ে তারক কি করেছেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। বর্ধমান শহরের একটি অভিজাত পানশালায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তারকের। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাঙ্ক থেকে তছরুপের অর্থ আদপেই কতটা উদ্ধার করা সম্ভব হবে তা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশ কর্তারাও।