মঙ্গলবার সকাল প্রায় সাড়ে আটটা নাগাদ মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার ঘটনায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হল পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায়। বিশেষত, দামোদরের নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই গোটা জেলা জুড়ে লাল সতর্কতা জারী করা হয়েছে। দামোদর তীরবর্তী এলাকার মানুষকে সাবধান করা হয়েছে। একেবারে নীচু এলাকার মানুষদের ইতিমধ্যেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসকদের বিভিন্ন এলাকা খতিয়ে দেখতে পাঠান জেলাশাসক। একইসঙ্গে এদিন জেলা জুড়ে এই বন্যা পরিস্থিতিতে নবান্নের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে জেলাওয়াড়ি পরিস্থিতি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলার ব্লক আধিকারিকদের নিয়েও সবরকমের সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ জারী করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের ব্যাপক বৃষ্টির সঙ্গে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারের আপার ক্যাচমেণ্ট এরিয়ায় ব্যাপক বৃষ্টির জন্য এই পরিস্থিত সৃষ্টি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যের মধ্যেই জলাধার থেকে ছাড়া জল পূর্ব বর্ধমান জেলার দামোদরের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই গলসী ১ ও ২, খণ্ডঘোষ, রায়না এবং জামালপুর এলাকায় ব্যাপক নজরদারী এবং প্রচার চালানো হচ্ছে। মোটরবাইকে মাইক বেঁধে চলছে প্রচার। জেলাশাসক জানিয়েছেন, প্রাথমিক রিপোর্টে, জামালপুরে একটি দুটি জায়গায় বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। খণ্ডঘোষে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেচ দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, ‘কিউআরটি’ তৈরি করে জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জামালপুরে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি দল এবং গলসী ২ ব্লকে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি দলকে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও ২৪ ঘন্টার একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দামোদর তীরবর্তী সমস্ত ফেরিঘাট বন্ধ রাখার জন্যে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। নজর রাখা হয়েছে ফেরিঘাটগুলিতে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন জামালপুর দামোদর তীরবর্তী এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন বিডিও পার্থসারথি দে এবং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মেহেমুদ খান। এরই পাশাপাশি খণ্ডঘোষের বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন জেলাপরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম ও বিডিও। অপার্থিব ইসলাম ও মেহেমুদ খান জানিয়েছেন, নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে লোকজনকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধগুলিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংস্কার শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে সবসময় নজর রাখা হয়েছে।