এই বছর দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়েছে কাঁকসার সাহেব পাড়ার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মুর্মু। তার স্বপ্ন তিরন্দাজিতে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে পদক আনার। কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে অলিম্পিক গেমস। অনেকেই দেশের হয়ে মেডেল নিয়ে এসেছে। তাই তারও স্বপ্ন দেশের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার। তবে আর্থিক অনটনের কারণে সে সব স্বপ্ন এখন ভাঙতে বসেছে প্রিয়ঙ্কার।
প্রিয়াঙ্কার বাবা সোনা মুর্মু পেশায় দিন মজুর। খেলাধুলার জন্য স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অধীনে বীরভূমের বোলপুরে এতদিন পড়াশোনার সঙ্গে তিরন্দাজির প্রশিক্ষণ নিত প্রিয়ঙ্কা। তবে একদিকে লকডাউন অন্য দিকে বোলপুরে পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে পুরোপুরিভাবে প্রশিক্ষণ বন্ধ তার।
প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছে, ছোটবেলায় মামার কাছে তার তিরন্দাজিতে হাতে খড়ি। তার পরেই তিরন্দাজিকে নিয়েই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে প্রিয়ঙ্কা। বীরভূমের স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়াতে প্রশিক্ষণের সময় কয়েকটি রাজ্যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল প্রিয়ঙ্কা। তবে তার উপরে ওঠা হয় নি। বহু জায়গা থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কারও পেয়েছে প্রিয়ঙ্কা। তবে উন্নত মানের সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের অভাবে সবই এখন বন্ধ।বর্তমানে বাড়িতে থেকে বাবার সঙ্গে চাষের কাজে বাবাকে সাহায্য করে প্রিয়ঙ্কা। প্রিয়াঙ্কার খবর জানতে পেরে তাকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন কাঁকসা ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী। তিনি জানিয়েছেন, তারা প্রতিভাবান ওই আদিবাসী তীরন্দাজের পাশে দাঁড়িয়ে সব রকম সাহায্য করবেন।
শুক্রবার বিকেলে মোবাইলে ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রিয়ঙ্কা ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য SC-OBC সেলের সদস্য সুন্দর লাল পাশোয়ান। তিনি প্রিয়াঙ্কাকে আশ্বাস দিয়েছেন, তার কলেজে ভর্তি হতে ও তার পড়াশোনার জন্য তার পাশে দাঁড়াবে। এবং তিরন্দাজিতে যাতে সে আরও উপরে উঠতে পারে তার প্রশিক্ষণের জন্য সব রকম সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন সুন্দরলাল পাশোয়ান। আশ্বাস পেয়ে খুশি প্রিয়াঙ্কার মা সুনিতা মুর্মু। তিনি জানিয়েছেন, সবাই যখন তার মেয়ের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছে, তখন তার মেয়ের স্বপ্ন একদিন ঠিকই পূরণ হবে।