কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে এবার সরাসরি রাজনৈতিক স্বজন পোষণের অভিযোগ তুলল বিজেপি। শনিবার থেকে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও প্রথম ধাপে ৭টি কেন্দ্রে ৭০০ জনকে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম টিকা নেন সঞ্জয় মাঝি। অন্যদিকে, এদিন ভাতাড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রথম টিকা নেন ভাতাড়ের তৃণমূল বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল। এছাড়াও এদিন ভাতাড়ে টিকা নিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা, বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জহর বাগদি, ভাতাড় পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মহেন্দ্র হাজরা প্রমুখরাও। কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও এদিন টিকা নিয়েছেন।
এদিকে, জনপ্রতিনিধিদের এই টীকাকরণ নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী অভিযোগ করেছেন, করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম দফায় সেই সমস্ত করোনা যোদ্ধাদেরই দেওয়ার কথা ছিল যাঁরা সামনের সারিতে থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। কিন্তু এদিন যেভাবে ভাতাড়ে জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে কিংবা কাটোয়ায় জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তা লজ্জার সমস্ত সীমা অতিক্রম করে গেছে। উল্লেখ্য, এদিন যখন জনপ্রতিনিধিরা এই টীকা নিয়েছেন সেই সময় খোদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজের একাধিক নার্সকে এদিন টিকাকরণের জন্য ডাকা হলেও তালিকায় তাঁদের নাম না থাকায় ঘুরে যেতে হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁরা টীকা পাননি। এব্যাপারেও এদিন সুর চড়িয়েছেন বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণবাবু। তিনি জানিয়েছেন, যে সমস্ত ডাক্তার, নার্স যাঁরা কোভিড চিকিৎসার জন্য সামনে থেকে লড়াই করছেন তাঁরাই ভ্যাকসিন না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন আর জনপ্রতিনিধিরা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন – এটা অত্যন্ত লজ্জার।
যদিও এব্যাপারে এদিন খোদ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিক ডা. প্রণব রায় জানিয়েছেন, এদিন জনপ্রতিনিধি হিসাবে যাঁরা টীকা নিয়েছেন তাঁরা কোনো না কোনোভাবেই রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে যুক্ত। যেহেতু তাঁরা রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য সর্বদাই হাসপাতালের ভাল মন্দ পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাই এই তালিকায় তাঁরাও ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্য। তাই এর মধ্যে অনিয়ম কিছু নেই। অন্যদিকে, বর্ধমান হাসপাতালে নার্স অনিতা মজুমদার জানিয়েছেন, তাঁকে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল এদিন সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালে টীকা নেওয়ার জন্য। তিনি যথারীতি আসেনও। কিন্তু তালিকায় নাম না থাকায় এদিন আর তাঁর টীকাকরণ হয়নি। এরপরে হবে হয়ত। এদিকে, ভ্যাকসিন নিয়ে বিজেপি এই অভিযোগ করলেও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, এর মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। কারণ এদিন যে সমস্ত জনপ্রতিনিধি টীকা নিয়েছেন তাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সরকারিভাবে বলা হয়েছে যাঁরা করোনা আক্রান্ত তাঁরা প্রথমে পাবেন এই টীকা। তাই এর মধ্যে রাজনৈতিক স্বজনপোষণের কোনো বিষয়ই নেই। বিজেপি রাস্তায় থাকে না। তাঁরা জানেই না নিয়মকানুন। নিয়ম না জেনেই অভিযোগ করাই ওদের কাজ।