যতটা গর্জন হল ততটা বর্ষণ হল না। দলত্যাগের পর ফের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতা জীতেন্দ্র তিওয়ারি। শুক্রবার রাতে কলকাতায় রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জীতেন্দ্র তিওয়ারি ফের দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে কাজ করার কথা ঘোষণা করেন। জীতেন্দ্র তিওয়ারি এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘আমি যা করেছিলাম ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছিল। আমি আমার ভুল স্বীকার করে নিয়ে ফের দলের হয়ে কাজে যোগদান করবো।
জানা গেছে, এদিন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেও কথা বলে জীতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে কার্যকারী ভূমিকা নেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসানসোলকে স্মার্ট সিটির তকমা পেতে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বাধা হয়েছিলেন – এই বিষয়কে সামনে রেখে জীতেন্দ্র তিওয়ারি বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন এবং দলের সমস্ত পদ ছেড়ে দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তারপর পানাগড়ে সেইদিন রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুনীল মন্ডলের বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে যোগদান করেন।
এই বৈঠকের পর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জীতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গ খুব প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। এই খবরে বিজেপির অন্দরে মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় থেকে বিজেপির স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পান্ডবেশ্বরের তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও জীতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন। পান্ডবেশ্বরের কোন কোন এলাকায় জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে মিছল বের করা হয় এবং তাঁর কুশপুতুল পোড়ানো হয়। শেষমেষ জিতেন্দ্র তিওয়ারি নিজের দলে ফিরে এলেন।
এদিকে শনিবার সকালে জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। সেখানে জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁর অনুগামীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই কয়দিন যা হল আমাদের তা ভুলে ফের সকলের সঙ্গে দলের হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা সকলেই দিদিকে ভালোবাসি। আর আমাকে যারা ভালোবাসেন তাঁরা কোন রকম অশান্তির মধ্যে যাবেন না। যারা আমার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন, তাঁরা হয়তো আমার দল ত্যাগে ব্যাথিত হয়ে আবেগের বশে এইসব করেছেন। আমাদের শান্তিপূর্ণ ভাবে ফের দলের হয়ে কাজে যোগদান করতে হবে।