ঘূর্ণিঝড় আমফান যেন স্মৃতি উস্কে দিয়েছে কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েত কলোনির বাসিন্দা দিনমজুর নমিতা লোহারের। তিন বছর আগে এই রকমই এক প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ি ভেঙে সর্বশ্রান্ত হয়ে যান নমিতা লোহার। সেই সময় ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি পেলেও স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে নমিতা লোহার বলেন, ‘গত তিন বছরে বাস্তবে কিছুই পাই নি আমি। তিন বছর আগে একদিন এক প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ির চাল উড়ে যায়। মাটির দেওয়াল ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে বেশকিছুদিন খোলা আকাশের নীচে ছিল বসবাস। অনেক কষ্টে দিন আনা দিন খাওয়া পয়সা বাঁচিয়ে কোনরকমে একটা আশ্রয় করেছি।’ আশ্রয়স্থল বলতে বাঁশ-মাটির দেওয়ালের উপর টালির আচ্ছাদন। তাতে কোনরকমে থাকেন নমিতা লোহার। বাড়িতে থাকার পর্যাপ্ত জায়গা নেই বলে ছেলেমেয়েরাও নমিতাদেবীকে ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে বলে জানান নমিতা দেবী। গত তিন বছর ধরে প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরেও নমিতা দেবীর ভাঙা ঘর পাকা হয় নি বলে অভিযোগ। একটা ত্রিপলও জোটেনি বলে অভিযোগ নমিতা লোহারের। কোনরকম সাহায্য মেলে নি স্থানীয় বিডিও অফিস থেকে বলে অভিযোগ হতভাগ্য নমিতাদেবীর।

জানা গেছে, ‌ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকায় রেশন সামগ্রীও পাচ্ছিলেন না। স্থানীয় ক্লাব ও পাড়া প্রতিবেশীদের চেষ্টায় এখন তিনি রেশন সামগ্রী পাচ্ছেন বলে জানান নমিতা দেবী। জানা গেছে, করোনা আবহে নমিতা লোহারের করুণ অবস্থা দেখে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সেই আশ্বাস কবে বাস্তবায়িত হবে তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। নমিতা লোহার বলেন, ‘প্রতিবছর রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ে প্রচুর মানুষের ক্ষয়ক্ষয়ি হয়। সরকার বিপদের সময় প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু আমার তিন বছর আগে ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ি উড়ে গেল। আমি কার্যত খোলা আকাশের নীচে বাস করছি। আমি খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছি। আমার কবে মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই হবে সেই দিনের অপেক্ষায় দিন গুনছি এখনও।’

Like Us On Facebook