সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে গলসি ১ ও ২ অঞ্চলে রীতিমত শাসকদলের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে নির্দল সমর্থকরা। বেশ কিছু আসনে তারা তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ও ছিনিয়ে নিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে গলসি ১ ও ২, মেমারি এবং ভাতারের বেশ কিছু আসন নির্দল সমর্থকরা পেলেও তাদের দলে ফেরানোর প্রশ্নে এখনও অনঢ় তৃণমূলের উর্ধতন নেতৃত্ব। খোদ দলের বর্ধমান জেলার পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন নির্দলদের কোনোভাবেই দলে ফেরানো হবে না।
এদিকে, দলে তাদের ফেরানো হোক বা না হোক স্বঘোষিতভাবেই এখন গলসি ১ ও ২ অঞ্চল জুড়ে গ্রামবাসীদের কাছে তারা নিজেদের আসল তৃণমূল হিসাবেই মেলে ধরছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় গলসি অঞ্চল জুড়েই রীতিমত তৃণমূল বনাম নির্দল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আর তারই মাঝে শুক্রবার রাতে রামপুর গ্রামের তৃণমূল পার্টি অফিসে তালা ঝোলানোর ঘটনায় নতুন করে এই বিরোধ আরও উস্কে দিল।
স্থানীয় নির্দল সমর্থক রাজু ঘোষ জানিয়েছেন, রামপুর গ্রামের তথাকথিত ওই তৃণমূল পার্টি অফিসটি আগে গ্রামের একটি ক্লাব ছিল। কিন্তু হঠাৎই ক্লাবের বদলে সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিস করা হয়। তা নিয়ে গ্রামের মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁরা চান রাজনীতি রাজনীতির মত থাক, ক্লাব ক্লাবের মত চলুক। রাজু ঘোষ অভিযোগ করেছেন, পার্টি অফিসের নামে ওই ঘরে বোমা রাখা হচ্ছে, অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে। তাই গ্রামের মানুষ রাজনীতি হঠিয়ে দিয়ে পুনরায় ক্লাবকে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরাই তৃণমূল দল করে আসছেন। এবারেও গ্রামের মানুষ তাঁকেই প্রার্থী হিসাবে চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে সেই সম্মান দেয়নি। কিন্তু তারপরেও তিনি চান তৃণমূল কংগ্রেসের নামে কেউ বাজে কাজ করলে তার প্রতিবাদ করবেন। এমনকি গ্রামের মানুষও তাই চান।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে রামপুর গ্রামের এই তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসটি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে গ্রামের নির্দল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকাল রাতে নির্দল সমর্থকেরা পার্টি অফিসের ভিতর থেকে তৃণমুল সমর্থকদের বের করে চাবি দিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। নির্দল সমর্থকদের দাবি তারাই আসল তৃণমুল। বাকিরা নামধারি তৃণমুল। অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা জয়দেব ঘোষ পাল্টা দাবি করেছেন, তিনি পরপর দুবার গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে বিজয়ী হয়েছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই নির্দলের নাম করে এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা চলছে। তিনি জানিয়েছেন, রামপুর গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরেই এই পার্টি অফিস আছে। কিন্তু নির্দলরা বাইরে থেকে লোক এনে গ্রামে ঝামেলা করার চেষ্টা করছে। শুক্রবারের ঘটনা সম্পর্কে জেলা নেতৃত্বকে সব কিছুই জানানো হয়েছে। যেহেতু রমজান মাস তাই এখনই এব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। রমজান মাস মিটে গেলেই এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।