রবিবার দুপুরে আচমকাই বর্ধমান জেলার বিভিন্ন জায়গায় হাল্কা ঝোড়ো হাওয়া আর কয়েক মিনিটের বৃষ্টি রীতিমত চিন্তায় ফেলে দিয়েছে শহরবাসীকে। আরও চিন্তার কারণ হয়েছে এই কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতেই বর্ধমান শহরের একাধিক রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় নাকাল হলেন শহরবাসীরা। এদিন এই এক পশলা বৃষ্টিতেই শহরের ছোটনীলপুর এলাকার খোল গোডাউন পাড়া, আমবাগান, নতুন কলোনী সহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় এই জল জমায় রীতিমত আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।

ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্য জড়ে করোনার সঙ্গে যশের প্রস্তুতিও তুঙ্গে। গোটা রাজ্যের সঙ্গে বর্ধমান জেলা জুড়েই যশ নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় চলছে সচেতনতামূলক প্রচার। শনিবার থেকেই মাইক নিয়ে এলাকায় এলাকায় সর্বসাধারণকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতন করা শুরু হয়েছে। জেলার প্রতিটি ব্লকেই ব্লক প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্যোগের সময় কিভাবে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লক সহ জেলা স্তরে দুর্যোগ মোকাবিলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। শনিবার থেকে জেলার ১৬জন বিধায়কের তত্ত্বাবধানে নিজের নিজের বিধায়ক জনসেবা কেন্দ্রগুলিতে সোম ও মঙ্গলবার টানা ৪৮ঘণ্টার জন্য বিধায়কদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দিলেই দ্রুততার সঙ্গে তার প্রতিবিধান করারও নির্দেশ জারী করা হয়েছে।

এদিকে, সরকারি এই প্রস্তুতির পাশাপাশি বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এগিয়ে এসেছেন। বর্ধমানের পশুপ্রেমী সংস্থা ভয়েস ফর ভয়েসলেসের সভাপতি অভিজিত মুখার্জী জানিয়েছেন, তাঁরা একটি উদ্ধারকারী দল তৈরি করেছেন। যশের প্রভাবে কোথাও কোন পশু, পাখির সমস্যা দেখা দিলে দ্রুততার সঙ্গে তাঁরা উদ্ধার করার জন্য তৈরি থাকছেন। অন্যদিকে, মেমারির পাল্লারোড সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার জানিয়েছেন, তাঁরাও ১৬ জনের একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছেন। তাঁদের কাছে খবর এলেই এই টিম দ্রুত উদ্ধারের কাজে হাত লাগাবেন।

এদিকে, যশের মোকাবিলায় যখন চারিদিকে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি তুঙ্গে সেই সময় বর্ধমান শহরের কয়েকটি জায়গায় জল জমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে, যশের প্রভাবে একটানা দু’দিন বৃষ্টি হলে কি হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্কও। যদিও বর্ধমান পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত গুহ জানিয়েছেন, ভয় বা চিন্তার কোন কারণ নেই। পুরসভার পক্ষ থেকে সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জল নিকাশী ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হয়েছে। কোথাও কিছু অসুবিধা থাকলে তা দুর করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, এদিনও যশের মোকাবিলা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে রাজ্যের সঙ্গে। বর্ধমান পুরসভা যশের মোকাবিলায় পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখছে। তৈরি থাকলে ক্যুইক রেসপন্স টিম। জেসিবি মেশিন, গাছ কাটার যন্ত্র থেকে ফ্লাড সেণ্টার, পানীয় জলের ট্যাঙ্ক তৈরি রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে পুরসভার কন্ট্রোল রুমও চালু থাকবে। ফলে নাগরিকদের অহেতুক আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

Like Us On Facebook