বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক শোভার মূল আকর্ষণ গোলাপবাগ লহর। আর এই লহরের শোভা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলেছে ভিক্টোরিয়া ক্রুজিয়ানা বা জায়েন্ট লিলি। দার-উল-বাহার দ্বীপ সহ বর্ধমান রাজপরিবারের একদা প্রমোদ উদ্যান গোলাপবাগকে ঘিরে থাকা প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ লহরটির বর্তমানে শোভা বর্ধন করছে এই অতিকায় লিলি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, বছর তিনেক আগে ‘বোটানিক্যাল সার্ভে অফ্ ইন্ডিয়া’র সঙ্গে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, নানা দেশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গবেষণা ও সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বায়োডাইভারসিটি হেরিটেজ সাইট’ হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। গোলাপবাগে ৫০ রকমের ঔষধি গাছ ও ৫০০ রকমের ফুলের গাছ রয়েছে। রাজতন্ত্রের সময় তদানিন্তন বর্ধমান মহারাজা নানান প্রজাতির বিদেশি গাছ এনেছিলেন গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে, সেই সব গাছ আজও রয়েছে ।
‘বোটানিক্যাল সার্ভে অফ্ ইন্ডিয়া’র সৌজন্যে পাওয়া এই অতিকায় লিলি বা ভিক্টোরিয়া ক্রুজিয়ানা ২০১৬ সালের মে মাসে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম-এ প্রথম রোপণ করা হয়। সকালে ফুল ফোটার সময় এর রঙ সাদা থাকে, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে এটি গোলাপি রঙ ধারণ করে। আমাজনের এই অতিকায় জলজ ফুল গাছের পাতার পরিধি ২ মিটারের বেশি হতে পারে। এই ফুল গাছের পাতা একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ভার বইতে পারে। শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের পর রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই প্রথম ‘জায়েন্ট লিলি’ লাগান হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম-এ ভিক্টোরিয়া ক্রুজিয়ানা রোপণ করে সাফল্য পাওয়ার পর এই জলজ গাছ রোপণ করা হয় গোলাপবাগ লহরে। এখন অসাধারণ সুন্দর ফুল ও অতিকায় পাতা নিয়ে লহরে বিস্তার লাভ করছে এই বিদেশি লিলি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লহরে এই অতিকায় লিলিকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী মহলে তৈরি হয়েছে কৌতুহল। ভিক্টোরিয়া ক্রুজিয়ানার ফুল এবং পাতা লহরের আকর্ষণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে।