জোড়া ফুলের দাপটে ধরাশায়ী বিজেপি। আর রাজ্যের বিরোধী দলকে কার্যত পিছনে ফেলে পুরভোটে নিজেদের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করে নিল সিপিএম। বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬টি পুরসভার নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হতেই একের পর এক ওয়ার্ডে যখন গেরুয়া শিবিরকে পিছনে ফিরে তরতরিয়ে এগিয়ে গেছে তৃণমূল। তখন কাটোয়ায় তৃণমূলের জয় রথকে ৪ জায়গায় আটকে দিয়েছে জাতীয় কংগ্রেস। এমনকি কাটোয়ায় তৃণমূলের একাংশ সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর জয় তৃণমূলের অফিসিয়াল শিবিরকে চিন্তায় ফেলেছে। এরই পাশাপাশি কালনা পুরসভায় সিপিএম একটি আসনে তৃণমূলের জয়রথকে থামিয়েছে। আবার মেমারি পুরসভায় তৃণমূল রথকে একটি আসনে রুখে দিয়েছে কংগ্রেস প্রার্থী। কিন্তু জেলার ৬টি পুরসভাতেই নিরঙ্কুশ তৃণমূলের জয় সত্ত্বেও যেভাবে বামেরা ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে এই পুরভোটের ফলাফলে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গেছে চর্চাও।

বর্ধমান পুরসভায় বিধায়ক খোকন দাসের নেতৃত্বে ৩৫টি আসনেই একচেটিয়া জয় হাসিল করেছে তৃণমূল। কোন কোন ওয়ার্ডে ৯০ শতাংশ ভোট পাওয়ারও নজীর গড়েছেন প্রার্থীরা। বর্ধমান পুরসভার দায়িত্বে থাকা বিধায়ক খোকন দাস জানিয়েছেন, এই জয় মানুষের জয়। সাধারণ মানুষ উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। এদিন বর্ধমানের ইউআইটি ভবনে একের পর এক তৃণমূল প্রার্থীরা জয়লাভ করতেই তৃণমূল সমর্থকদের উচ্ছ্বাস আছড়ে পড়ে জিটি রোডে। সবুজ আবিরে ঢেকে যায় গোটা রাস্তা। খোদ বর্ধমান থানার এক অফিসারের মুখেও ছুঁড়ে দেওয়া হয় সবুজ আবির। এমনকি উচ্ছ্বসিত সমর্থকরা হুডমুড়িয়ে ইউআইটি ভবনের গেট ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ায় পুলিশ তাঁদের আটকায়।

এদিন এই ফলাফল প্রকাশের পর সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের রায় এই ফলাফলে প্রকাশিত হয়নি। বেপরোয়া ছাপ্পা ভোটের রায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যেখানে যেখানে সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছায় ভোট দিতে পেরেছেন সেখানেই তৃণমূলের ভোট কমেছে, বেড়েছে বামেদের ভোট। তিনি জানিয়েছেন, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের পর এদিনের পুরভোটের ফলাফলে বামেদের শতাংশের বিচারে ভোট অনেকটাই বেড়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারলে এই ফলাফল বদলে যেত।

অন্যদিকে, এদিন ফলাফল প্রকাশের পর বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা জানিয়েছেন, মানুষ ভোটই দিতে পারেনি। তাই তার ভিত্তিতে জনতার রায় প্রতিফলিত হয়নি। এই জয় ছাপ্পা ভোটের জয়। জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রবীর গাঙ্গুলী জানিয়েছেন, তাঁদের সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই লড়াই করেছেন। লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে তাঁরা পালাননি। কাটোয়া এবং মেমারিতে মানুষ কংগ্রেসকে চেয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারলে কংগ্রেস আরও ভাল ফল করতে পারত।

Like Us On Facebook