কয়েক মাস আগেই অন্ডালে খোলামুখ খনি সংলগ্ন হরিশপুর গ্রামে ব্যাপক ধস দেখা দেয়। গ্রামের প্রচুর বাড়িঘর ভেঙে যায়। আতঙ্কে গ্রাম ছাড়েন গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। ওই গ্রামের মানুষ বারবার ইসিএলের দফতরে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। একইভাবে জামবাদ খনি এলাকায় কয়েক মাস আগে ধসের কারণে একটা সম্পূর্ণ বাড়ি সমেত এক মহিলা তলিয়ে যান মাটির তলায়, মৃত্যু হয় তাঁর। তখন ইসিএলের বিভিন্ন দফতরে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে শুধুই আশ্বাস দেন কিন্তু কাজের কাজ আজও হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
এবার জামবাদ খনি এলাকার পড়াশকোল গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে ঘর ছাড়ছেন গ্রামের মানুষ। তাঁরা আশ্রয় নিচ্ছেন গাছতলায়। একে তো করোনা মহামারির আতঙ্ক, তার ওপর ধসের আতঙ্ক। এই অবস্থায় কোথায় যাবেন কীভাবে ঘর সংসার নিয়ে বাঁচবেন এই ভাবনাটাই ভাবাচ্ছে গ্রামের মানুষদের। অন্ডাল থানার পুলিশ এবং আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আতঙ্কে ঘরছাড়া মুনমুন দে জানান, যেভাবে জামবাদ খোলামুখ খনিতে ব্লাস্টিং হয়, তার কারণেই গ্রামের প্রচুর বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে ও ধসের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় গতকাল থেকে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন তাঁরা। এই মহামারির সময় কারও বাড়ি গিয়েও থাকরও উপায় নেই। নিজের থাকার বাড়িটাতেও আতঙ্কে থাকতে পারছেন না। তাই গাছতলাতেই আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি জানান, প্রয়োজনে গাছতলাতেই পরিবার নিয়ে সকলেই মৃত্যুবরণ করব। এ ব্যাপারে ইসিএলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এই অবস্থায় গ্রামবাসীরা ক্ষোভে জামবাদ খোলামুখ খনির পরিবহণের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি জামবাদ খোলামুখ খনির জেনারেল ম্যানেজারের অফিসে গ্রামের সমস্ত মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভে সামিল হন।