দামোদরের জলের তোড়ে বানভাসি হল দক্ষিণ দামোদের রায়না ও জামালপুরের একাংশ। একইসঙ্গে গলসির জয়কৃষ্ণপুরেও দামোদরের বাঁধের অবস্থা খারাপ হওয়ায় এদিনই জেলা পরিষদ সভাধিপতির কাছে বাঁধ মেরামতির দাবি জানিয়ে গেলেন গলসি-২ এর জেলা পরিষদ সদস্য সবিতা ঘড়ুই। অন্যদিকে, মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় দামোদরে জল ছাড়ার ঘটনা নিয়ে যখন প্রশাসনিক দড়ি টানাটানি চলছে – সেই সময় বুধবারও বিকাল ৬টা পর্যন্ত ডিভিসির পক্ষ থেকে ২ লক্ষ১৬ হাজার ৬৫০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হল। একদিকে লাগাতার অতি বৃষ্টি তার ওপর দামোদরে জল ছাড়ার ঘটনায় রীতিমত আতংক সৃষ্টি হল পূর্ব বর্ধমান জেলার দামোদর তীরবর্তী এলাকায়।
জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। কোথাও কোথাও বৃষ্টির জল জমে যাওয়ায় জলবন্দি মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হয়েছে। কাটোয়ার ২৫ জনকে স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়াও রায়না-২এ দুটি ত্রাণ শিবির খুলে সেখানে ১৫০ জনকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়াও বর্ধমান সদরের বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৫০জনকে স্থানীয় একটি স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বর্ধমান পুরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কিছু নিচু এলাকায় থাকা কয়েকটি পরিবারকে মঙ্গলবার রাত থেকে স্থানীয় একটি স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্ত ব্লকে ব্লকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আউশগ্রামের ভেদিয়া এবং ভাতার ব্লকে আগাম বেশ কিছু বস্তা পাঠানো হয়েছে নদীতে বাঁধ দেওয়ার জন্য।
বর্ধমান জেলার যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর এলাকায় চাষের জমি জলের তলায় রয়েছে। অপরদিকে, অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে বর্ধমান জেলার সঙ্গে হুগলী,মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলার সঙ্গে যোগাযোগকারী দামোদরের কৃষকসেতুর উপরের রাস্তার ফাটল বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়ে এদিন সকালেই জেলাশাসকের নেতৃত্বে প্রশাসনিক আধিকারিকরা সেতু পরিদর্শনও করেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) নিখিল নির্মল জানিয়েছেন, এদিনই পূর্ত দপ্তরকে দ্রুত সেতু মেরামতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।