করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পূর্ব বর্ধমান জেলায় আরও সেফ হোম তৈরি রাখার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ পাঠালো নবান্ন। মঙ্গলবারই এই নির্দেশ পূর্ব বর্ধমান জেলায় এসে পৌঁছানোর পরই জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সাথে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকও করলেন। উল্লেখ্য, সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৪২১ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সোমবার কমায় কিছুটা স্বস্তি দেখা দিলেও করোনা সংক্রমণ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ধরণের সতর্কতা নেওয়া দরকার তা অনেক জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে না। তার সঙ্গে রয়েছে যখন তখন রাজনৈতিক কর্মসূচী।
সোমবার সিবিআইয়ের হাতে মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের পর জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। যেখানে সামাজিক দূরত্ব বিধি কার্যত শিকেয় উঠেছে। ফলে আগামী দিনে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। আর তাই গোটা রাজ্য জুড়েই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সুযোগ দিতে রাজ্য সরকার প্রতিটি জেলায় জেলায় আরও বেশি করে সেফ হোম তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ অনুসারেই পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও মঙ্গলবার সমস্ত ব্লকে ব্লকে একটি করে সেফ হোম তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। এদিনই সমস্ত বিডিওদের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে জেলাশাসক আলোচনাও করেছেন বলে জানা গেছে। সেক্ষেত্রে যে ব্লকে যেরকম সুবিধাযুক্ত জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই এই সেফ হোম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কোনে স্কুলকে নেওয়ার দরকার পড়লে তাও সেফ হোম হিসাবে ব্যবহার করা হবে।
এদিন বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অনির্বাণ কোলে জানিয়েছেন, এদিনই নবান্ন থেকে তাঁরা নির্দেশিকা পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই জেলায় কোভিড হাসপাতালের পাশাপাশি প্রতিটি মহকুমাতেই একটি করে সেফ হোম তৈরি রাখা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকা অনুসারে এবার প্রতিটি ব্লকে ব্লকেও তাঁরা তৈরি রাখছেন সেফ হোম। কিষাণ মাণ্ডি, স্কুল ছাড়াও পরিকাঠামোগত সুবিধা যুক্ত জায়গাতেই এই সেফ হোম তৈরি রাখা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুসারে তাঁরা সেগুলি ব্যবহার করবেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, বর্ধমানের কৃষি খামার প্রাঙ্গণে জেলা কৃষি ভবনকে পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতাল হিসাবেই চালু করা হয়েছে। এছাড়াও বর্ধমান শহর কেন্দ্রিক রয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ক্যামরি হাসপাতাল। কালনায় কালনা হাসপাতাল ছাড়াও একটি লজকে সেফ হোম হিসাবে তৈরি রাখা হয়েছে। কাটোয়াতেও মহকুমা হাসপাতাল ছাড়াও সেখানে একটি লজকে তৈরি রাখা হয়েছে সেফ হোমের জন্য।