মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নড়েচড়ে বসল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবারই বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক বৈঠক করে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেই বৈঠক থেকেই বালি, পাথর পাচারের বিরুদ্ধে কড়া নির্দেশ দিয়ে যান জেলা পুলিশকে। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জানান, তাঁর কাছে সবটাই খবর আছে, ১০টা বালির চালান দিয়ে ২০টা লরী কিভাবে পাচার হচ্ছে। টাকা খাওয়া খায়ি চলছে। ঘুষ খাওয়া চলে। এগুলো চলবে না। তিনি নির্দেশ দিয়ে যান, এগুলো বন্ধ করতে ওয়াচ টাওয়ার, সিসি টিভি লাগাতে হবে। শুধু বর্ধমানই নয়, একইসঙ্গে এই নির্দেশের আওতায় তিনি নিয়ে আসেন পাশের জেলা বীরভূম এবং বাঁকুড়াকেও।
মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশের পরই শুক্রবার রাত থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ রীতিমত নড়েচড়ে বসল। অন্তত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ যে মানা হচ্ছে তাই তুলে ধরার জন্য শুক্রবার রাত থেকে জেলার সমস্ত থানাগুলি ব্যাপক হারে রেইড করতে শুরু করল। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানা এলাকা থেকে ১৩টি, মাধবডিহি থানা এলাকা থেকে ১৫টি এবং বর্ধমান থানা এলাকা থেকে ১৭টি জায়গায় হানা দিয়ে আটক করা হয়েছে অবৈধ বালি বোঝাই ১০৮টি ট্রাককে। এই ঘটনায় বালির গাড়ির চালক ও খালাসী সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ৯৪ জনকে। একইসঙ্গে এই হানাদারীতে আটক করা হয়েছে অবৈধ বালি খাদানের বেশ কিছু জিনিসপত্রকেও। এখনো পর্যন্ত এই তিনটি থানা এলাকার ঘটনায় মোট ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই হানাদারী জারী রয়েছে এবং তা লাগাতার চলবে। যদিও পুলিশের এই হানাদারীর ঘটনায় রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লরীর চালক থেকে বালি খাদানের মালিকরা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের কাছে বৈধ চালান থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের অযথা হয়রানি করেছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতিবছরের মত এবছরও গত ২৫ জুন থেকে সরকারীভাবে নদী থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বর্ষাজনিত কারণে। কিন্তু তারপরেও চোরাগোপ্তা বালি তোলার কারবার চলছেই।