ফেসবুকের সৌজন্যে প্রায় ১০ মাস পর হারিয়ে যাওয়া ভাইকে খুঁজে পেলেন দাদা। শনিবার সেই ভাইকে নিয়ে গেলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে। বর্ধমানের বাহির সর্বমঙ্গলাপাড়ার বাসিন্দা বর্ধমান পুরসভার কর্মী মাসুদ খান জানিয়েছেন, প্রতিদিনই তিনি বর্ধমানের স্টশন বাজারে আসেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি স্টেশনের বাইরে এক ব্যক্তিকে দেখছেন। প্রথম প্রথম সে টাকা চাইত। তিনি মাঝে মাঝে তাঁকে খাবার কিনে দিতেন। আস্তে আস্তে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। এভাবে চলার মাঝেই ৩দিন আগে তার পরিচয় জানতে পারেন তিনি।
মাসুদ খান জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির নাম শিশু দাস। বাড়ি মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে। তিনি একজন গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন। দুর্ঘটনায় তার বাঁদিকের কোমড়ের নিচে ভেঙে যায়। ফলে কাজ হারান তিনি। তাঁর স্ত্রী সহ ছেলেমেয়েও রয়েছেন। ভরতপুর ছেড়ে এরপর তিনি হুগলীর হিন্দমোটর এলাকায় যান। সেখানে তাঁর স্ত্রী সহ ৩টি মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। সেখানেই তিনি ভ্যান রিক্সা চালিয়ে সংসার প্রতিপালন করতেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন তাঁকে দেখতেন না বলে শিশু দাসের অভিমান। এরপর ফিরে যান ভরতপুরে। কিন্তু সেখানেও সংসারে টাকা পয়সা দিতে না পারায় প্রায় দিনই গঞ্জনা সইতে হত। এরপর তাঁর মেজদাদার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি চলে আসেন বর্ধমানে। সেই থেকেই তিনি বর্ধমান স্টেশনে রয়েছেন।
মাসুদ খান জানিয়েছেন, তিনদিন আগে শিশু দাসই তাঁর বাড়ির খোঁজ জানান এবং আবেদন করেন ফেসবুকে তাঁর বিষয়টি জানাতে। এরপরই তিনি ফেস বুকে শিশু দাসের ছবি দিয়ে বিষয়টি জানান। তারপরই শিশু দাসের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শনিবার তারাই অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে শিশু দাসকে ভরতপুর নিয়ে গেলেন। এদিন শিশু দাসের দাদা কৃষ্ণা দাস জানিয়েছেন, তার ভাইকে অনেক খুঁজেছেন পাননি। তাঁরা ভেবেছিলেন শিশু দাস হয়ত আর বেঁচেই নেই। আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ফেস বুকের মাধ্যমে তাঁরা ভাইয়ের সন্ধান পান। দীর্ঘদিন পর ভাইকে খুঁজে পেয়ে এদিন খুশী গোটা পরিবার। আর চরম খুশী খোদ শিশু দাসও এদিন নিজের দাদাদের কাছে পেয়ে চোখের জলে ভাসলেন।