মুণ্ডেশ্বরীর জলের তোড়েই ফের ভেঙ্গে যাচ্ছিল বিয়ে। মাস দুয়েক আগেও প্রায় বিয়ের ঠিক হয়ে গিয়েছিল রায়না-২এর বড়বৈনান গ্রামের বাসিন্দা রিয়ার। কিন্তু পাত্রের সঙ্গে অন্য এক মহিলার সম্পর্ক থাকায় কার্যত গ্রামবাসীদের উদ্যোগেই ভেস্তে দেওয়া হয় সেই বিয়ে। এরপর রিয়ার বিয়ে ঠিক হয় রায়না-২ এর মুগুরা গ্রামের বাসিন্দা দেবনাথ মাজিল্যার। বৃহস্পতিবার যথারীতি বিয়ের সমস্ত জোগাড় করে তৈরি ছিলেন রিয়ার বাবা ক্ষুদ্র চাষী কমল গুপ্ত। কিন্তু এরই মাঝে মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে গোটা গ্রাম প্লাবিত। এদিকে, সন্ধ্যে নাগাদ যথারীতি প্রায় ৬০ জন বরযাত্রী নিয়ে বর হাজির হন বড়বৈনান গ্রামের মুখে। কিন্তু জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়া পাকা রাস্তার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রবল জলস্রোত দেখে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিয়ের বরযাত্রীর বাস নিয়ে বেশিরভাগ বরযাত্রী ফিরে আসেন। খবর যায় স্থানীয় তৃণমূল যুব নেতা তথা রিয়াদের প্রতিবেশী শ্যামল অধিকারীর কাছে। সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের যুবকদের নিয়ে ছোটেন গ্রামের মুখে। কার্যত জলের স্রোত দেখে পাত্রও বেঁকে বসেন বিয়েতে। তাহলে কি লগ্নভ্রষ্টা হয়ে যাবে রিয়া? কান্নায় ভেঙে পড়েন কমলবাবুরা। এরপরই জোর করে বর আর নিতবরকে হাফ প্যাণ্ট পড়িয়ে কোলে তুলে নিয়ে শ্যামলবাবুরা হাজির হন বিয়ের মণ্ডপে। চারিদিকে জলের স্রোতের মাঝেই শেষ পর্যন্ত রিয়া আর দেবনাথের চার হাতের মিলন ঘটিয়ে শুক্রবার সকালে গ্রামবাসীদের কোলে চেপেই প্রায় অর্ধেক কিলোমিটার রাস্তা এসে তাঁদের গাড়িতে চাপিয়ে মুগুরা গ্রামে রিয়ার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করিয়ে দেন বড়বৈনান গ্রামের মানুষজন।

Like Us On Facebook