বৃহস্পতিবার বর্ধমানের দুটি সভাতে এসেই কেন্দ্রীয় সরকারের চালু করা জিএসটি নিয়ে রীতিমত সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুটি সভাতেই বারবার তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণে তীব্র ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। এদিন জি এস টি নিয়ে রীতিমত ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা জিএসটির পক্ষে ছিলাম। কিন্তু সব জোর করে পালটে দেওয়া হয়েছে। ওষুধ সহ সব কিছুর উপরে কেন্দ্রীয় সরকার ট্যাক্স চাপিয়ে দিয়েছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু তিনি একা ছিলেন তাই তার কথাকে মান্যতা দেয়নি কেন্দ্র সরকার। জিএসটি নিয়ে মানুষের কাঁধে বন্দুক রেখে ভয় দেখানো হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন আমরা মানুষের পক্ষে। মানুষকে অসুবিধায় ফেললে আমরা ছেড়ে কথা বলবো না।ব্যাঙ্ক থেকে চারবারের বেশি টাকা তুললে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। নিজের টাকা নিজে তুলব, তা কেটে নেবে কেন। কি চলছে দেশে ? এদিন সাংবাদিকদের জিএসটি প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জিএসটি নিয়ে ঠিক কি হচ্ছে তা এখনও তাঁর কাছেই পরিষ্কার নয়। আগামী ৩ মাস তাঁরা গোটা বিষয়টি দেখবেন। আর এজন্য আগামী ৬ মাস রাজ্যে জিএসটি লাগু তাঁরা হতে দেবেন না। অন্তত সাধারণ মানুষও গোটা বিষয়টি বুঝুক। তাঁদেরও বোঝার সময় দিতে হবে। ৪০ হাজার কোটি টাকা দেনার মাঝেও জিএসটির প্রভাবে আর্থিক ক্ষতি কিভাবে রাজ্য সরকার মেটাবে সেই প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যেহেতু এখনও তাঁর কাছে গোটা বিষয়টি পরিষ্কার নয়, তাই এখনই এব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, এদিন পুলিশ লাইন মাঠে প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস মানে একটা আদর্শ। যে আদর্শের জন্য সব কিছু ছাড়া যায় কিন্তু মানুষকে ছাড়া যায় না। তৃণমূল কংগ্রেস সিবিআই টিবিআইকে ভয় পায় না। ভয় পায় মানুষকে। মানুষের কল্যাণের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস সব ছাড়তে রাজী আছে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক এবং প্রকাশ্য সভায় ৩৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২৮টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে ২১টি প্রকল্পের বিবিধ সহায়তাও প্রদান করেন তিনি। দুটি সভাতেই হাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচীব বাসুদেব বন্দোপাধ্যায়। এছাড়াও হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, স্বপন দেবনাথ, সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু, জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব, জেলার বিধায়ক ও সাংসদরাও।