বিটুমিনাসের সঙ্গে বর্জ্যকে ব্যবহার করে অন্ধকার রাস্তায় আলোর ছটা (লাইট রিফ্লেক্টর) দেখা যাবে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার বড়বৈনানে! জেলা প্রশাসনের প্রাতিষ্ঠানিক স্বশক্তিকরণ (আইএসজিপি) বিভাগ এই রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে, কয়েক দিনের মধ্যেই ওই রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যাবে। অন্য দিকে, মাধবডিহির উচালনের পরে ফের ‘নীল রাস্তা’ তৈরি করল আইএসজিপি। মঙ্গলবার দুপুরে মেমারির রায়বাটিতে ওই রাস্তার উদ্বোধন করা হয়।উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শুভলক্ষ্মী বসু বলেন, ‘প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগানোর জন্যেই এই ধরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে, পরিবেশ বান্ধব রাস্তা তৈরি হচ্ছে।’ আইএসজিপির জেলার কো-অর্ডিনেটর রফিকুল ইসলামের দাবি, ‘জেলায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ইউনিট থেকেই রাস্তা তৈরির জন্য আমরা প্লাস্টিক কিনেছি।’
আইএসজিপি সূত্রে জানা যায়, বিটুমিনাসের সঙ্গে বর্জ্য প্লাস্টিক মিশিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তার সঙ্গে থার্মোপ্লাস্টিকের নীল রঙ, রাসায়নিক মিশিয়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। মেমারি ২ ব্লকের রায়বাটি গ্রামের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিটের কাছে ১৫০ মিটার রাস্তার রঙ নীল হয়েছে। এর জন্যে মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতি রাজ্যের পঞ্চম অর্থ কমিশন থেকে ওই রাস্তার জন্যে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। আইএসজিপির ইঞ্জিনিয়র রাকেশ কুমার ধারা বলেন, ‘এই ধরণের রাস্তায় বিটুমিনাসের সঙ্গে ৬% প্লাস্টিক বর্জ্য মেশানো হয়েছে। তাপ-বিকিরণ কম হবে এবং মরীচীকাও রাস্তায় থাকবে না।’ মেমারির রাস্তার জন্যে ২৪০ কেজি প্লাস্টিক লেগেছে। আর মাধবডিহির বড়বৈনানে তৈরি হওয়া রাস্তায় ৫০ কেজি প্লাস্টিক লাগবে।
আইএসজিপি সূত্রে জানা যায়, বড়বৈনানের পশড়া থেকে ঘড়ির ঢাল পর্যন্ত ৬০৫ মিটার রাস্তাকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ২৫০ মিটার রাস্তা কালোর বদলে হবে নীল রঙের। বাকি রাস্তা কালো হবে। তবে ওই রাস্তার উপর বিশেষ বর্জ্য মিশিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ‘লাইট রিফ্লেক্টর’ তৈরি করা হবে। যাতে অন্ধকারেও পথচলতি মানুষজন আলোর ছটা পান। সে জন্যে প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ করা হচ্ছে। জেলার কো-অর্ডিনেটর বলেন, ‘প্লাস্টিক বর্জ্যকে আমরা কী ভাবে আরও বেশি করে ব্যবহার করতে পারি, তার জন্যই নানা পরীক্ষা-নীরীক্ষা করা হচ্ছে।’