ধান জমিতে জলের হাহাকার। সঙ্কটে রাজ্যের শস্যভান্ডার পূর্ব বর্ধমান জেলার ধানচাষ। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জল দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় চাহিদা মতো জল মিলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ডিভিসি। ২০১৫ সালে এই ধরণের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সেবার ঝাড়খণ্ড থেকে জল কিনে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল রাজ্য। এবার ঝাড়খণ্ড থেকেও জল মিলবে না। ফলে ধান কিভাবে বাঁচবে তা ভেবে পাচ্ছেন না জেলার চাষিরা।
জানা গেছে, বর্ধমান জেলায় এবার তিন লক্ষ আশি হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আড়াই লক্ষ হেক্টর জমির চাষ ডিভিসির জলের ওপর নির্ভরশীল। ডিভিসির ক্যানালে জল নেই। ফলে মাঠ ফুটিফাটা। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ফলন কিছুই মিলবে না বলে আশঙ্কা চাষিদের। পুজোর আগে তিতলির হাত ধরে কিছুটা বৃষ্টি মেলায় মুখে হাসি ফুটেছিল চাষিদের। কিন্তু তারপর আর বৃষ্টি না হওয়ায় এবং ডিভিসি জল দিতে না পারায় রাতের ঘুম ছুটেছে চাষিদের।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকে বসে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। সেই বৈঠকে সব বিডিও, এসডিও সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরের প্রশাসনিক কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও। এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ডিভিসি থেকে যেটুকু জল মিলবে তা শুক্রবার থেকে তিনদিন সেচের জন্য দেওয়া হবে। রাজ্য সরকার কিনতে আগ্রহ দেখালেও জল না থাকায় তা বিক্রি করতে তারা অপারগ বলে জানিয়ে দিয়েছে ঝাড়খণ্ড। এই অবস্থায় পুকুর-ডোবা সহ জলাশয় থেকে জল নিয়ে চাষ বাঁচানোর চেষ্টা হবে। নদী থেকে পাম্পের মাধ্যমে জল তুলে পাশ্ববর্তী এলাকায় সেচের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ দফতর যে সব সাবমার্সিবলের সংযোগ কেটে দিয়েছে। আপাতত বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে সেগুলি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাইস মিল গুলিকে নিজেদের পাম্প চালিয়ে তার পাশ্ববর্তী এলাকার জমিতে জল দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এইসব পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয়ে চাষিরা।